আসন্ন গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া আটকাতে এবং নির্বাচনী ক্ষতি কমানোর জন্য দলের বহু সিনিয়র নেতা এবং মন্ত্রীদের মনোনয়ন দেয়নি বিজেপি। পরিবর্তে, গত ২৭ বছর ধরে রাজ্যে ক্ষমতায় থাকা বিজেপি এবার ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য দলবদল করে বিজেপিতে আসা নেতৃত্ব এবং নতুন মুখের উপর নির্ভর করছে।
বৃহস্পতিবার বিজেপির জারি করা প্রার্থীদের প্রথম তালিকা অনুসারে ১৭ জন দলবদলকারী এবং ৩৮ জন নতুন মুখ রয়েছে। ১৬০ জন প্রার্থীর তালিকায় ১৪ জন মহিলা, ১৩ জন তফশিলি জাতি এবং ২৪ জন তফশিলি উপজাতি প্রার্থী রয়েছে৷
কংগ্রেস ছেড়ে বুধবারই বিজেপিতে যোগ দেওয়া ভগভাই বাড়ড়কে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। অন্য এক প্রাক্তন কংগ্রেস কর্মী মোহনসিংহ রাথভা, যিনি মাত্র দুদিন আগে তার দুই ছেলে সহ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তাকেও পুরস্কৃত করা হয়েছে। তাঁর ছেলে রাজেন্দ্র সিংহকে ছোটোদেপুর আসন থেকে প্রার্থী করেছে বিজেপি।
মোরবি কেন্দ্রে বিজেপি তার প্রার্থী পরিবর্তন করেছে, যেখানে ৩০ অক্টোবর একটি ঝুলন্ত সেতু ধসে ১৩৫ জন মারা গিয়েছিল। প্রাক্তন বিধায়ক অমৃতিয়া, যিনি দুর্ঘটনার পরে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে লোকদের উদ্ধার করেছিলেন বলে জানা গেছে, তিনি ওই কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রতীকে লড়বেন। বর্তমান বিজেপি বিধায়ক ব্রিজেশ মের্জাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
উল্লেখযোগ্যভাবে আহমেদাবাদের ১১ জন বর্তমান বিধায়ক এবং রাজকোটের ৪ জন বিধায়ককে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।
গুজরাটের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি, প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী নীতিন প্যাটেল, প্রাক্তন সিনিয়র মন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ চুদাসামা এবং প্রদীপ সিংহ জাদেজা সহ সৌরভ প্যাটেল এবং কৌশিক প্যাটেল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না। তাঁরা জানিয়েছেন, "অন্যদের সুযোগ দেওয়া উচিত"।
পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, নির্বাচনী বিপর্যয়ের আশঙ্কায় এই নেতাদের নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে দাঁড়াতে বলেছে বিজেপি হাইকম্যান্ড।
গুজরাট কংগ্রেসের প্রাক্তন কার্যনির্বাহী সভাপতি হার্দিক প্যাটেল যিনি এই বছর বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তিনি ভিরামগাম কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
জামনগর উত্তর থেকে লড়াই করবেন ক্রিকেটার রবীন্দ্র জাদেজার স্ত্রী রিভাবা।
পর্যবেক্ষকরা জানিয়েছেন, দলবদলকারীদের পুরস্কৃত করে এবং বর্তমান বিধায়কদের বদল করে, গেরুয়া শিবির রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে নিরবচ্ছিন্ন বিজয়ের ধারা বজায় রাখার চেষ্টা করছে। উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সাল থেকে গুজরাটে ক্ষমতায় আছে বিজেপি।
২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, বিজেপি ৯৯টি আসন জিতেছিল - যা আগের ২০১২ সালের নির্বাচন থেকে ১৬টি আসন কম।
যদিও নির্বাচনী ময়দানে AAP-এর প্রবেশ রাজনৈতিক ক্ষেত্রে একটি নতুন মাত্রা যোগ করলেও পর্যবেক্ষকদের মতে এখনও বিজেপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস। ২০১৭ সালে, রাহুল গান্ধী রাজ্যে নিবিড় প্রচার চালান। ওই নির্বাচনে কংগ্রেস ৭৭টি আসনে জয়ী হয়। ১৯৮৫ সালের নির্বাচনের পর যা ছিল সর্বোচ্চ। ১৯৮৫ সালের নির্বাচনে কংগ্রেস ১৪৯টি আসন জিতেছিল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন