মনোনয়ন না পেয়ে গুজরাটের ওয়াঘোদিয়া কেন্দ্রের ছয় বারের বিজেপি বিধায়ক মধুভাই শ্রীবাস্তব নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিলেন। আসন্ন গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে শ্রীবাস্তবকে মনোনয়ন দেয়নি বিজেপি। এরপরেই ক্ষুব্ধ শ্রীবাস্তব নিজের কেন্দ্র থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী ময়দানে নামবেন বলে জানিয়েছেন।
২০০২ সালের বেস্ট বেকারি কান্ডে নাম জড়িয়েছিল বিজেপি বিধায়ক মধুভাই শ্রীবাস্তবের। যে ঘটনায় ১৮ জনকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। ২০০৮ সালে তাঁকে গুজরাট পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এর আগে ১৯৮৫ সালে এক দাঙ্গার ঘটনায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় প্রিভেনশান অফ অ্যান্টি সোশ্যাল অ্যাক্টিভিটিস (পাসা) আইনে।
নিজের নির্দল প্রার্থী হবার ঘোষণা করার পাশাপাশি বিজেপি বিধায়ক ২৫ বছর আগে তাঁর বিজেপিতে যোগ দেওয়া ভুল হয়েছিল বলেও জানিয়েছেন। তাঁর মতে, নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের চাপাচাপিতে তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, ২০০২ সালের গুজরাট দাঙ্গায় এই বিধায়কের নাম জড়িয়েছিল।
বিজেপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন না পাওয়া প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল টিকিটের বিষয়ে কিছুই করতে পারবেন না। কারণ, "সবকিছুই দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্বের দ্বারা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়"।
তিনি কেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেননি প্রশ্ন করাতে শ্রীবাস্তব বলেন, “কেন আমি প্যাটেলের সঙ্গে কথা বলব? প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং মিস্টার শাহের সঙ্গে আমার সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে।” যদিও মনোনয়ন না পাওয়ার পরেও তিনি তাঁদের সঙ্গে কথা বলেননি বলে জানিয়েছেন।
সূত্র অনুসারে, শ্রীবাস্তব সেই ছয়জন বিদ্রোহীর মধ্যে একজন যারা গত কয়েকদিন ধরে প্রতিমন্ত্রী হর্ষ সাংঘভির সাথে দেখা করতে অস্বীকার করেন।
শ্রীবাস্তব ১৯৯৫ সালে নির্দল হিসেবে জয়ী হওয়ার পর বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা কংগ্রেস, জনতা দল এবং অন্যান্য সংগঠনের সাথেও রয়েছেন।
শ্রীবাস্তব বলেন, “আমি নিজে থেকে বিজেপিতে আসিনি। ১৯৯৫ সালে যখন আমি বিশাল ব্যবধানে জিতেছিলাম, তখন নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহ আমাকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। এটাই একমাত্র কারণ যে আমি বিজেপিতে যোগ দিয়েছি।”
শ্রীবাস্তবের ওয়াঘোদিয়া কেন্দ্রে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে ভাদোদরা জেলা বিজেপি প্রধান অশ্বিন প্যাটেলকে। যদিও এক সংবাদমাধ্যমে শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, যাকে তাঁর জায়গায় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তিনি কোনো স্থানীয় নির্বাচনেও কখনও জয়ী হননি। নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে বিজেপি বিধায়ক জানিয়েছেন, তিনি দলের সমস্ত পদ ছেড়ে দিয়েছেন।
যদিও বিজেপির পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। উল্লেখ্য, ১৮২ আসন বিশিষ্ট গুজরাট বিধানসভার জন্য ১৬০ জনের প্রথম যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে তাতে ৫জন মন্ত্রী এবং বিধানসভার স্পিকার সহ ৩৮ জন বর্তমান বিধায়ককে বাদ দেওয়া হয়েছে।
আগামী ১ এবং ৫ ডিসেম্বর দু’দফায় গুজরাট বিধানসভা নির্বাচন হবে এবং আগামী ৮ ডিসেম্বর ভোটগণনা হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন