মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানির আচমকা ইস্তফার পর পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করতে আজই বৈঠকে বসতে চলেছে গুজরাট বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক দল। গতকাল রাতে দলীয় মুখপাত্র ইয়ামল ব্যাস এই সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন। এই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাজ্য বিজেপির সদর দপ্তর কমলমে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাবার পরেই এই বৈঠকের সময় ঠিক করা হবে।
শনিবার বিকেলে আচমকাই গান্ধীনগরে গিয়ে রাজ্যপাল আচার্য দেবব্রতের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি। নির্ধারিত সময়ের প্রায় ১৫ মাস আগে তাঁর এই ইস্তফাকে ঘিরে শুরু হয় রাজনৈতিক জল্পনা। সূত্র অনুসারে, রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণেই দলীয় নেতৃত্বের বিরাগভাজন হয়েছিলেন রূপানি। যার ফলস্বরূপ তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।
পদত্যাগের পর বিজয় রূপানি সাংবাদিকদের জানান, তিনি বিজেপির একজন অনুগত সৈনিক এবং সম্পূর্ণ নিজের সিদ্ধান্তে পদত্যাগ করছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, কেউ তাঁকে পদত্যাগ করতে বলেনি। আমি দলীয় সংগঠন আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করে যাব। দল আমাকে যে দায়িত্ব দেবে আমি সেই দায়িত্ব পালন করবো।
তিনি আরও বলেন, আমি দলের একজন কর্মী মাত্র এবং তাই থাকবো। রাজ্যের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই আমাদের প্রধান মুখ হবেন। যদিও বিজেপির পক্ষ থেকে এর আগে জানানো হয়েছিলো আগামী গুজরাট বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিজেপির মুখ হবেন বিজয় রূপানি।
বিজেপির পক্ষ থেকে এখনও সরকারিভাবে রূপানির স্থলাভিষিক্ত কে হবেন সেই বিষয়ে জানানো হয়নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে এই দায়িত্ব পেতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘনিষ্ঠ প্রফুল প্যাটেল।
এছাড়াও এই জল্পনার তালিকায় আছেন গোরধন জাডাফিয়া। যিনি একজন পাতিদার নেতা এবং ২০০২ সালে তিনি নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য মন্ত্রীসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। তিনি বিজেপিতে ‘হার্ডলাইনার’ হিসেবে পরিচিত। তালিকায় আছে মনসুখ মান্ডব্যের নামও।
শনিবার সকালেই আহমেদাবাদ আসেন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বি এল সন্তোষ। দলীয় রাজ্য দপ্তরে তিনি এক জরুরি বৈঠকে মিলিত হন। যে বৈঠকে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানি, উপমুখ্যমন্ত্রী নীতিন প্যাটেল, গুজরাট বিজেপি সভাপতি সি আর পাটিল এবং রাজ্য সাংগঠনিক সম্পাদক রত্নাকর। এই বৈঠকের পরেই পদত্যাগ করেন বিজয় রূপানি।
২০১৬ সালের ৭ আগস্ট মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন বিজয় রূপানি। রাজকোট পশ্চিম কেন্দ্রের বিধায়ক রূপানির মুখ্যমন্ত্রীত্বের পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে গতমাসেই গুজরাট জুড়ে ৯ দিনের অনুষ্ঠান করেছিলো গুজরাট সরকার।
রূপানির পদত্যাগ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে গুজরাট প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অমিত চাভডা জানিয়েছেন, এই ইস্তফায় প্রমাণ হয়ে গেল গুজরাটের বিজেপি সরকার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ ছিলো।
- with inputs from IANS
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন