আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে ত্রিমুখী লড়াই হতে পারে। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। যার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছেন সিপিআইএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিম এবং বাম-কংগ্রেস জোট। তাই এই কেন্দ্রে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন সকলে।
মুর্শিদাবাদে তৃতীয় দফায় অর্থাৎ ৭ মে ভোটগ্রহণ হবে। ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের তরফ থেকে প্রার্থী হয়েছেন বিদায়ী সাংসদ আবু তাহের খান। বিজেপি প্রার্থী গৌরী শঙ্কর ঘোষ এবং সিপিআইএম প্রার্থী দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁকে সমর্থন করছে কংগ্রেস।
মহম্মদ সেলিমকে প্রার্থী করে মুর্শিদাবাদের অঙ্ক বিজেপি ও তৃণমূলের পক্ষে আরও জটিল করে দিয়েছে বামেরা। অনেকে মনে করছেন ২০১৯ সালে বিজেপি বিরোধী ভোট এবং তৃণমূল বিরোধী ভোট যেভাবে ভাগ হয়েছিল তা এইবার সেলিমের পক্ষে আসতে পারে। যা সেলিমের জয়ের পথকে কিছুটা সহজ করে দিতে পারে। গতবার বাম, কংগ্রেস, তৃণমূল এবং বিজেপি চার দলের মধ্যেই লড়াই হয়েছিল।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্যদিকে বিজেপিও সুবিধা পেতে পারে। সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূল এবং বাম-কংগ্রেসের মধ্যে ভাগাভাগি হলে বিজেপি হিন্দু ভোট পেয়ে জয়ী হতে পারে। দুই ক্ষেত্রেই চাপে থাকবেন তৃণমূল প্রার্থী আবু তাহের খান। তাঁর পক্ষে জয় পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
ভোট ভাগাভাগির পাশাপাশি তৃণমূলের অন্যতম অস্বস্তির কারণ হলো মুর্শিদাবাদে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। একটি গোষ্ঠী তৃণমূল প্রার্থী ঘনিষ্ঠ এবং অন্যটি মুর্শিদাবাদ জেলার তৃণমূল সভাপতি শাওনি সিংহ রায় ঘনিষ্ঠ।
উল্লেখ্য, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বিরোধী ভোট ভাগাভাগির সুবিধা নিয়েছিল তৃণমূল। কারণ গত লোকসভাতে তৃণমূলের ঝুলিতে গিয়েছিল ৪১.৫৭ শতাংশ ভোট। কংগ্রেস পেয়েছিল ২৬.৪৪ শতাংশ ভোট। বিজেপি পেয়েছিল ১৭.০৫ শতাংশ এবং সিপিআইএম-র ঝুলিতে গিয়েছিল ১২.৪৪ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, ১৯৮০ সাল থেকে ২০০৫ পর্যন্ত মুর্শিদাবাদ বামেদের দুর্গ হিসেবেই পরিচিত ছিল। টানা জয়ী হয়েছিল সিপিআইএম। ১৯৮০ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত পাঁচ বারের সাংসদ ছিলেন সিপিআইএম নেতা সৈয়দ মাসুদাল হোসেন। ২০০৫ সালে পালা বদল হয়। ওই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান হোসেন। ২০০৯ সালেও কংগ্রেস সাংসদ হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ২০১৪ লোকসভা নির্বাচনে সিপিআইএম প্রার্থী বদরুদ্দোজা খান জয়ী হয়েছিলেন মুর্শিদাবাদ কেন্দ্র থেকে। ২০১৯ সালে জয়লাভ করেন তৃণমূলের আবু তাহের খান।
-With IANS Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন