ঝাড়খণ্ডে ক্ষমতাসীন ইন্ডিয়া মঞ্চের আসন সমঝোতা নিয়ে ফের বিতর্ক দানা বাঁধল। আসন ভাগাভাগির বিষয়ে ঝাড়খন্ড মুক্তি মোর্চা এবং কংগ্রেস ঐক্যমতে পৌঁছলেও গতকাল আরজেডি জানিয়েছে এই আসন ভাগাভাগি ‘একতরফা’ ভাবে করা হয়েছে এবং এত কম আসনে আরজেডি লড়াই করবে না।
এর আগে শনিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন এবং কংগ্রেস নেতৃত্বের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল রাজ্যের ৮১ আসনের মধ্যে ৭০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে জেএমএম এবং কংগ্রেস। বাকি ১১ আসন ছাড়া হবে শরিকদলগুলির জন্য।
যদিও এই ঘোষণার পরেই আপত্তি জানান আরজেডি সাংসদ মনোজ ঝা। তিনি বলেন ১২-১৩টি আসনের কমে আরজেডি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেনা। কারণ ঝাড়খন্ডের কমপক্ষে ১৮ থেকে ২০টি বিধানসভা কেন্দ্রে আরজেডি ভালোরকমের প্রভাব আছে। পাশাপাশি তিনি এও জানান, আমাদের একমাত্র লক্ষ্য বিজেপিকে পরাস্ত করা। ইন্ডিয়া মঞ্চকে দুর্বল করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।
আরজেডি সাংসদ আরও বলেন, আরজেডি যদি ঝাড়খন্ড বিধানসভা নির্বাচনে এককভাবে লড়াই করে, তাহলেও কমপক্ষে ৬০টি আসনে তাঁরা ইন্ডিয়া মঞ্চের প্রার্থীদেরই সমর্থন করবে।
প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছিল জেএমএম-এর ভাগে থাকবে ৫০টি আসনে এবং কংগ্রেসের ভাগে থাকবে ৩১টি। যার মধ্যে জেএমএম নিজেদের ভাগের আসন থেকে বাম দলগুলিকে আসন ছাড়বে এবং কংগ্রেস তাদের ভাগের আসন থেকে আরজেডিকে আসন ছাড়বে। যদিও পরে এই সূত্র ভেঙে যায়।
রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের আসন সমঝোতা নিয়ে কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতা তথা সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপালের সঙ্গে জেএমএম নেতা হেমন্ত সোরেন কথা বললেও এখনও পর্যন্ত কোনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি। কারণ কংগ্রেস জানিয়েছে, জেএমএম তাদের ভাগের আসন থেকে কিছু আসন আরজেডিকে ছাড়ুক। যা ছাড়তে রাজি নয় জেএমএম নেতৃত্ব। কোনও কোনও সূত্র অনুসারে, আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় কংগ্রেস নেতৃত্বের ওপর ক্ষুব্ধ হেমন্ত সোরেন।
জেএমএম-এর এক নেতা এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, যদি কংগ্রেস চায় আরজেডি আরও বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক সেক্ষেত্রে তারা নিজেদের কোটা থেকে থেকে আরজেডি-কে আসন ছাড়ুক। কারণ জাতীয় স্তরে আরজেডি এবং কংগ্রেসের আঁতাত আছে। তারা কেন আমাদের মত ছোট আঞ্চলিক দলের ওপর চাপ দিচ্ছে।
অন্যদিকে জেএমএম-এর সঙ্গে আসন নিয়ে মতবিরোধে ক্ষোভ বাড়ছে কংগ্রেস মহলেও। বিশেষ করে রাঁচি কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস এবং জেএমএম দুই পক্ষই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে ইচ্ছুক। যা নিয়ে এখনও টানাপোড়েন চলছে।
ঝাড়খন্ডে আসন সমঝোতা বিতর্কের মাঝেই সিপিআই জানিয়েছে যদি আসন সমঝোতার ক্ষেত্রে সম্মানজনক আসন না পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে তারা একক শক্তিকে ১৫টি আসনে লড়াই করবার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সিপিআই-এর দু’দিনের রাজ্য কাউন্সিলের বৈঠক শেষে দলীয় নেতা রামকৃষ্ণ পান্ডে জানিয়েছেন, মঙ্গলবার পর্যন্ত দল ইন্ডিয়া মঞ্চের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করবে। এরপরেও যদি রফাসূত্র না বেরোয় সিপিআই এককভাবে নিজেদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন