ওড়িশার রাজ্যপাল রঘুবর দাসের নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয় অংশগ্রহণ নিয়ে সরগরম ঝাড়খন্ডের রাজনৈতিক মহল। যাকে সাংবিধানিক বিধি লঙ্ঘন বলেই মনে করছে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল। সম্প্রতি তিনি ঝাড়খন্ডের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীর হয়ে প্রচারে অংশ নেন।
ঝাড়খন্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রঘুবর দাস তাঁর আত্মীয় পূর্ণিমা দাসের পক্ষে সম্প্রতি নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেন। ঝাড়খন্ডের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে জামশেদপুর পূর্ব কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পূর্ণিমা দাস। এই কেন্দ্র থেকেই এর আগে বিজেপি প্রার্থী পাঁচবার নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন রঘুবর দাস।
বিজেপি প্রার্থীর হয়ে ওড়িশার রাজ্যপালের নির্বাচনী প্রচারে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা অজয় কুমার জানিয়েছেন, রঘুবর দাস রাজনৈতিক লাভের উদ্দেশ্যে ক্ষমতার এবং পদের অপব্যবহার করছেন। যদি তাঁর সক্রিয় রাজনীতিতে আগ্রহ থাকে তাহলে অবিলম্বে রাজ্যপাল পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে তাঁর সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করা উচিত। উল্লেখ্য জামশেদপুর পূর্ব কেন্দ্র থেকেই কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অজয় কুমার।
বিজেপির কড়া সমালোচনা করে অজয় কুমার বলেন, বিজেপি সংবিধান লঙ্ঘন করছে। কারণ এক সাংবিধানিক পদে থেকেও এক ব্যক্তি বিজেপির পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিচ্ছেন।
এই প্রসঙ্গে শিবসেনা (ইউবিটি) নেত্রী প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী এক এক্স বার্তায় (পূর্বতন ট্যুইটার) বলেন, দেশজুড়ে রাজ্যপাল পদের অপব্যবহার করা হচ্ছে এবং এই পদের রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে। তিনি রঘুবর দাসের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেবার জন্য রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছেও আবেদন জানিয়েছেন।
প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী বলেন, অবিলম্বে রাজ্যপাল পদের বিলোপ করা দরকার। সাংবিধানিক এই পদের লাগাতার অপব্যবহার করা হচ্ছে। ২০১৪ সাল থেকে বারবার রাজ্যপালের অফিসকে অবমাননা করা হচ্ছে। অবিলম্বে এই বিষয়ে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ করা প্রয়োজন।
ভারতীয় সংবিধান অনুসারে রাজ্যপাল পদকে নিরপেক্ষ হিসেবে ধরা হয় এবং রাজ্যপালের ভূমিকা সাংবিধানিকভাবে অরাজনৈতিক থাকা বাধ্যতামূলক। সমালোচকদের মতে, দলীয় প্রচারে অংশ নিয়ে ওড়িশার রাজ্যপাল রঘুবর দাস তাঁর অফিসের অবমাননা করেছেন। যা ঝাড়খন্ড বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে সাংবিধানিক ও নৈতিক সংকট তৈরি করেছে।
ঝাড়খণ্ডের রাজনীতিতে রঘুবর দাস দীর্ঘদিনের প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত। জামশেদপুর পূর্ব কেন্দ্র থেকে ১৯৯৫ সালে বিহার বিধানসভায় নির্বাচিত হন এবং একই কেন্দ্র থেকে টানা পাঁচবার জয়লাভ করেন। নির্বাচনী এলাকায় তাঁর ব্যাপক প্রভাব থাকার কারণে বিজেপি প্রার্থীর পক্ষে তাঁর প্রচারে অংশগ্রহণ নিয়ে সরগরম হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক মহল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন