‘বজরংবলী’ ইস্যুতে কর্ণাটকে বাজিমাত করতে চেয়েছিল বিজেপি। তবে, এই ইস্যু যে বিজেপি’র পক্ষে যায়নি, তা স্পষ্ট হয়েছে নির্বাচনী ফলাফলে। উল্টে, ‘দুর্নীতি’ ইস্যুতে দক্ষিণী রাজ্যে ক্ষমতা হারাতে হল গেরুয়া শিবিরকে।
বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রকাশিত ‘ইস্তেহারে' বজরং দল ও পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া (PFI)-কে সাম্প্রদায়িক দল হিসাবে দেখানো হয়েছিল। এবং ক্ষমতায় ফিরলে এই দুই দলের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে ঘোষণা করা হয়।
এরপরেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সরব হয়ে, বিষয়টিকে ভোটপ্রচারে ইস্যু করে তোলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রামনামের পর এবার কংগ্রেস বজরংবলী স্লোগানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। কংগ্রেসের এই চেষ্টার বিরুদ্ধে কর্ণাটকবাসীকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক দেন।
দেখা যাচ্ছে, মোদীর এই নির্বাচনী প্রচার বিজেপির ভোট ব্যাঙ্কে খুব একটা প্রভাব ফেলেনি। উল্টে, উগ্রবাদী বজরং দলকে নিষিদ্ধ করার প্রতিশ্রুতিতে মুসলিম ভোট বেড়েছে। এতদিন যে মুসলিম ভোট আঞ্চলিক দল হিসাবে জনতা দল সেক্যুলারের পক্ষে ছিল, তা চলে গিয়েছে কংগ্রেসে। এর ফলে, ভোট শেয়ারের পাশাপাশি আসন সংখ্যা কমেছে জনতা দল সেক্যুলার বা JD(S)-র।
শনিবার ভোট গণনার এক ঘন্টার মধ্যে, বিজেপি দাবি করে, তাঁদের কোনও ভোট শেয়ার কমেনি। JD(S)-র ভোট চলে গিয়েছে কংগ্রেসে। নির্বাচনী ফলাফলে বিজেপির সেই তথ্য সঠিক বলে মনে হচ্ছে।
কর্ণাটকের পুরাতন মহীশূর এলাকাকে JD(S)-এর শক্ত ঘাঁটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই অঞ্চলে ৫৫ টি বিধানসভা আসন রয়েছে। ভোক্কালিগাস জাতি এবং মুসলিম ভোটাররা এই আসনগুলিতে জয়-পরাজয়ের সিদ্ধান্ত নেন। এবং এই উভয় সম্প্রদায়কেই JD(S)-এর ভোট-ব্যাঙ্ক হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
কিন্তু, বজরং দলকে নিষিদ্ধ করার কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতি মুসলিম ভোটকে কংগ্রেসের পক্ষে যেতে সাহায্য করেছে।
২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ১৮.৩ শতাংশ ভোট পেয়ে ৩৭ টি আসন জিতেছিল JD(S)। আর, ৩৮.১ শতাংশ ভোট পেয়ে ৮০টি আসন জিতেছিল কংগ্রেস। কিন্তু, এবার JD(S)-এর ভোট শেয়ার কমেছে ৫ শতাংশ। অন্যদিকে গতবারের তুলনায় প্রায় ৫ শতাংশ বেশি ভোট পেয়েছে কংগ্রেস।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন