দক্ষিণ ভারতের মধ্যে একমাত্র রাজ্য হিসেবে কর্ণাটকেই ক্ষমতায় ছিল বিজেপি। এবার তাও হাতছাড়া হল নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের। শনিবার, কংগ্রেসের দখলে ১৩৬ টি আসন আসতেই হার স্বীকার করে নিয়েছেন কর্ণাটকের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই। এখনও পর্যন্ত ৬৩ আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি এবং ২০-টি আসনে এগিয়ে রয়েছে এইচ. ডি কুমারস্বামীর জেডি(এস)।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দলের পরাজয় স্বীকার করে নেন মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপি কর্মীরা অনেক চেষ্টা করেছেন, তা সত্ত্বেও কোনও ছাপ ফেলতে পারিনি। পূর্ণাঙ্গ ফলাফল আসার পরেই, বিষয়টি নিয়ে আমরা বিশ্লেষণ করব। খতিয়ে দেখব, কোথায় আমরা পিছিয়ে পড়েছি। লোকসভা নির্বাচনের আগে এই ফলাফল বিশ্লেষণ করে আমরা আরও শক্তিশালী ভাবে ফিরে আসব।’
এদিকে, জয়ের আভাস মিলতেই সমস্ত দলীয় বিধায়ককে বেঙ্গালুরুতে আসার নির্দেশ দিয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। নির্বাচিত বিধায়কদের নজরে রাখতে কংগ্রেস বেশ কয়েকটি রিসর্ট বুক করেছে বলে জানা যাচ্ছে। দলীয় সূত্রে খবর, প্রয়োজনে এই সমস্ত বিধায়কদের তামিলনাড়ুতে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হতে পারে। এজন্য তামিলনাড়ুর ক্ষমতাশীন ডিএমকে-এর নেতৃত্বের সাথে যোগাযোগ চলছে।
অন্যদিকে, জেডিএস নেতা এইচডি কুমারস্বামী জানিয়েছেন, ‘তিনি কোনও দলের সাথে যোগাযোগ করছেন না।‘ যদিও, গতকালই, জেডি(এস) মুখপাত্র তানভীর আহমেদ (Tanveer Ahmed) বলেন, ‘কংগ্রেস (Congress) ও বিজেপি (BJP) আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গিয়েছে। যখন সঠিক সময় আসবে, তখন আমরা জনগণকে জানিয়ে দেব।’
তবে, তানভীরের এই বক্তব্যের উল্টো সুরে কথা বলেছেন কুমার স্বামী। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি ছোট দল, আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই... ভালো উন্নয়নের আশা করছি আমি।’
কর্ণাটকের ক্ষমতা হারালেও নিজেদের ভোট শতাংশ ধরে রেখেছে বিজেপি। তাঁদের ঝুলিতে গিয়েছে ৩৫.৮ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে, জেডিএস-এর ভোটে থাবা বসিয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেস পেয়েছে ৪৩.০৩ শতাংশ ভোট, আর জেডিএস পেয়েছে ১২.৯৭ শতাংশ ভোট।
২০১৮ সালের নির্বাচনে বিজেপি জিতেছিল ১০৪টি আসনে। সেই জায়গায় এবার অনেকটাই পিছিয়ে গেরুয়া শিবির। মাত্র ১৫ আসনে জিতেছে বিজেপি, আর এগিয়ে রয়েছে মাত্র ৫০ আসনে।
কংগ্রেস জিতেছিল ৮০ টি আসনে। এবার সেই পরিসংখ্যানের তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে হাত শিবির। ইতিমধ্যেই ২৬ টি আসনে জিতেছে কংগ্রেস, আর এগিয়ে রয়েছে ১১০ টি আসনে।
অন্যদিকে, জেডিএস জিতেছিল ৩৭ আসনে। সেই জায়গায় এবার অনেকটাই পিছিয়ে জেডিএস। মাত্র ৩ আসনে জিতেছে কুমারস্বামীর দল, আর এগিয়ে রয়েছে মাত্র ১৭ টি আসনে।
বিজেপি নেতা তথা কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরিআপ্পা এই ফল প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, "কর্ণাটকের জনগণের এই রায়কে আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে মেনে নিচ্ছি।"
অন্যদিকে এই জয়ের আনন্দের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে কেঁদে ফেললেন কর্নাটকের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমার।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন