এক নতুন রাজনৈতিক দলের প্রতিষ্ঠা নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছে বিজেপির কর্ণাটক শাখা। কর্ণাটকে ক্ষমতাসীন বিজেপি দলের প্রাক্তন নেতা এবং খনি সম্রাট বলে পরিচিত, গালি জনার্ধন রেড্ডি রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তার নতুন দল প্রতিষ্ঠা করতে প্রস্তুত বলে জানা গেছে। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই আশঙ্কার কালো মেঘ ঘনিয়েছে রাজ্য বিজেপির অন্দরে।
জনার্দন রেড্ডির ঘনিষ্ঠ সূত্র থেকে জানা গেছে, তিনি ইতিমধ্যে 'কল্যাণ রাজ্য প্রগতি পক্ষ' নামে এক নতুন রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, তিনি নির্বাচন কমিশনে তাঁর রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন করতে নয়াদিল্লি যাচ্ছেন।
একসময়ের বিজেপি ঘনিষ্ঠ রেড্ডি ভাইদের সঙ্গে ইদানীং বিজেপি কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে চলছে। কারণ খনি ব্যবসার সম্রাট হিসেবে পরিচিত জনার্দন রেড্ডিকে ২০১৮ সালে জেলে পাঠানো হয় এবং তাঁর নিজের জেলা, বল্লারিতে তাঁর প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
রেড্ডি এবং তার ভাইয়েরা বিজেপির এই আচরণে অসন্তুষ্ট হয় এবং প্রকাশ্যেই সেকথা জানায়। সম্প্রতি রেড্ডি নয়াদিল্লি গিয়েছিলেন এবং বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে তার অসন্তোষ জানানোর চেষ্টা করেছিলেন।
তাঁকে পরিবহন মন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেবার পর বিজেপি বি. শ্রীরামুলুকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদ দেয়। যদিও রাজ্যের রাজনীতিতে জনার্দন রেড্ডির অবস্থান এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে দল কোনও দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দেয়নি।
এর পরেই নতুন দল গঠনের দিকে এগোন জনার্দন রেড্ডি। যে প্রস্তুতিতে বিজেপি কর্ণাটক ইউনিট চিন্তিত এবং দলীয় নেতৃত্ব হাইকমান্ডকে অনুরোধ করেছেন যে, কোনওভাবে তাঁর সাথে কথা বলে যেন তাঁর এই প্রচেষ্টা আটকানো হয়।
বিজেপির অভ্যন্তরীণ সূত্র অনুসারে, জনার্দন রেড্ডি যদি তাঁর রাজনৈতিক দল গঠন করেন, তবে কমপক্ষে ২০ টি বিধানসভা আসনে বিজেপির জয়ের সম্ভাবনা গুরুতরভাবে প্রভাবিত হবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে নোটবাতিলের সময় বেঙ্গালুরুতে রেড্ডির মেয়ের জমকালো বিয়ের অনুষ্ঠান বিজেপিকে যথেষ্ট বিব্রত করেছিল। জনার্দন রেড্ডির ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, তিনি রাজনীতিতে দ্বিতীয় ইনিংসের জন্য প্রস্তুত।
বিজেপির দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে, রেড্ডি ইতিমধ্যেই কপ্পাল জেলার গঙ্গাবতীতে চলে গেছেন এবং শাসক বিজেপিকে চিন্তিত রেখে সেখান থেকে ফিরে আসার জন্য কাজ শুরু করেছেন। রাজ্যের রাজস্ব মন্ত্রী আর. অশোক যদিও আশাবাদী যে রেড্ডি কোনও নতুন দল চালু করবেন না।
যদিও এখনও পর্যন্ত রেড্ডি এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেননি, কিন্তু তাঁর সাম্প্রতিক কার্যকলাপ থেকে স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে তিনি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে তাঁর পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন