লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি পর্বেই কেরালায় দুই যুযুধান প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআইএম এবং কংগ্রেসের মধ্যে শুরু হয়েছে কথার লড়াই। দুই দলের পক্ষ থেকেই একে অপরের বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে গোপন বোঝাপড়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।
কেরালার ২০টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২০১৯ নির্বাচনে কংগ্রেস জয়ী হয়েছিল ১৯টি আসনে এবং ১টি আসনে জয়ী হয় সিপিআইএম। বিজেপি কোনও আসনেই জয়ী হয়নি।
ভোট শতাংশের বিচারে সেবার কংগ্রেস পেয়েছিল ৪৭.৪৮ শতাংশ ভোট। সিপিআইএম নেতৃত্বাধীন বাম জোট পায় ৩৬.২৯ শতাংশ ভোট এবং বিজেপি পেয়েছিল ১৫.৬৪ ভোট।
যদিও ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে ছবিটা সম্পূর্ণ পাল্টে যায়। সেবার সিপিআইএম নেতৃত্বাধীন বাম জোট পায় ৪৫.৪৩ শতাংশ ভোট, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ পায় ৩৯.৪৭ শতাংশ ভোট এবং বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট পায় ১২.৩৬ শতাংশ ভোট।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি কেরালার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকাশ জাভড়েকর রাজ্যে অনেক বেশি সময় দিচ্ছেন এবং কেরালার থিরুবনন্তপুরম, ত্রিসূর অথবা কাসারগড় – এই তিনটি কেন্দ্রের যে কোনও একটি কেন্দ্রে জয়ের আশা করছে বিজেপি। বিজেপি নেতা প্রকাশ জাভড়েকরের দাবি, এবারের নির্বাচনে কেরালা বিজেপির জন্য অন্য ফলাফল দেবে। লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার আগে থেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও কেরালার ওপর জোর দিয়েছেন।
যদিও বিজেপির এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে কেরালার বাম এবং কংগ্রেস শিবির। দুই পক্ষেরই মত কেরালা এবারও শূন্য হাতে ফেরাবে বিজেপিকে। যদিও এর পাশাপাশি দুই পক্ষই দুই পক্ষকে আক্রমণ করতেও ছাড়েনি।
কেরালা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ভি ডি সতীশন জানিয়েছেন, রাজ্যের বাম সরকার গোপনে বিজেপি ও সংঘ পরিবারের সঙ্গে সখ্যতা বজায় রেখে চলছে। তাঁর দাবি, এই দুই দলের মধ্যে যাই গোপন চুক্তি থাকুক এবারেও কেরালার মানুষ লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের পক্ষেই মত দেবে।
কংগ্রেস নেতার এই কথার উত্তরে বিজেপি নেতা এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি মুরলীধরণ জানিয়েছেন, বিরোধী দলনেতা তাঁর দায়িত্ব পালন না করে বাজারে গুজব ছড়াচ্ছেন।
কংগ্রেসের আনা অভিযোগ প্রসঙ্গে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক এম ভি গোবিন্দন বলেন, কংগ্রেসের সঙ্গে বিজেপির গোপন বোঝাপড়া আছে। যদিও যে বোঝাপড়াই থাকুক না কেন, আমাদের একটাই লক্ষ্য, বিজেপিকে রাজ্যে পা রাখতে না দেওয়া।
তিনি আরও বলেন, বিজেপিকে যে আমরা এক ইঞ্চিও জমি ছাড়িনা তার প্রমাণ ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের যে একটিমাত্র আসন, নেমোম কেন্দ্রে বিজেপি জিতেছিল আমরা ২০২১-এ সেখানেও তাদের হারিয়েছি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন