অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনেও দেশের ৬৩ লক্ষের বেশি মানুষ নোটা (NOTA)-য় ভোট দিলেন। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের নোটা ভোটের তুলনায় কিছুটা কম হলেও ২০১৪-র নির্বাচনের অনুপাতে তা অনেকটাই বেশি। দেশের ৫৪৩ আসনের মধ্যে কমপক্ষে ১০টি আসনে বড়ো সংখ্যায় মানুষ নোটায় ভোট দিয়েছেন। যা প্রমাণ করে এইসব কেন্দ্রের কোনও প্রার্থীকেই তাঁরা পছন্দ করেননি।
ভারতের নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুসারে ২০২৪-এর নির্বাচনে নোটায় মোট ভোট পড়েছে ৬৩,৭২,২২০ (০.৯৯%)। ২০১৯-এ নোটায় ভোট পড়েছিল ৬৫,২২,৭৭২ (১.০৬%) এবং ২০১৪-তে পড়েছিল ৬০,০২,৯৪২ (১.০৮%)।
এবারের নির্বাচনে নোটায় সবথেকে বেশি ভোট পড়েছে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে। ২,১৮,৬৭৪। এই কেন্দ্রে মনোনয়ন জমা দেবার পরেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেস প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে বিজেপিতে যোগ দেন। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এরপর সাধারণ মানুষের কাছে নোটায় ভোট দেবার আবেদন জানানো হয়েছিল।
ইন্দোরের পরেই নোটায় সবথেকে বেশি ভোট পড়েছে আরাকুতে (৫০,৪৭০)। এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থীকে ৫০,৫৮০ ভোটে পরাজিত করেছেন ওয়াইএসআরসি কংগ্রেস প্রার্থী।
ওড়িশার নবরঙ্গপুর লোকসভা কেন্দ্রে নোটায় ভোট পড়েছে ৪৩,২৬৮। এই কেন্দ্রে বিজেডি প্রার্থীকে বিজেপি প্রার্থী পরাজিত করেছেন ৮৭,৫৩৬ ভোটে।
বিহারের গোপালগঞ্জ আসনে এবার নোটায় ভোট পড়েছে ৪২,৮৬৩। উল্লেখযোগ্যভাবে ২০১৯ সালে এই কেন্দ্রে নোটায় ভোট পড়েছিল ৫১,৬৬০। যা ওইবছরের সর্বাধিক নোটা ভোট ছিল। এবার গোপালগঞ্জ কেন্দ্রে বিকাশশীল ইনসান পার্টির প্রার্থীকে জেডিইউ প্রার্থী পরাজিত করেছেন ১,২৭,১৮০ ভোটে।
ঝাড়খন্ডের কোডারমা কেন্দ্রে নোটায় ভোট পড়েছে ৪২,১৫২। এই কেন্দ্রে সিপিআইএমএল প্রার্থীকে ৩,৭৭,০১৪ ভোটে পরাজিত করেছেন বিজেপি প্রার্থী।
ওড়িশার কোরাপুট কেন্দ্রে নোটায় ভোট পড়েছে ৩৭,১৩১। এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী। তিনি বিজেডি প্রার্থীকে ১,৪৭,৭৪৪ ভোটে পরাজিত করেছেন।
বিহারের হাজিপুর কেন্দ্রে নোটায় ভোট পড়েছে ৩৬,৯২৭। এই কেন্দ্রে আরজেডি প্রার্থীকে ১,৭০,১০৫ ভোটে পরাজিত করেছেন এলজেপি(আরভি) প্রার্থী চিরাগ পাশোয়ান।
ছত্তিশগড়ের বস্তার কেন্দ্রে নোটায় ভোট পড়েছে ৩৬,৭৫৮। এই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থীকে ৫৫,২৪৫ ভোটে হারিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী।
বিহারের ঝঞ্ঝারপুরে নোটায় ভোট পড়েছে ৩৫,৯২৮। এই কেন্দ্রে ভিআইপি প্রার্থীকে হারিয়ে জেডিইউ প্রার্থী জিতেছেন ১,৮৪,১৬৯ ভোটে।
দাহোদ কেন্দ্রে নোটায় ভোট পড়েছে ৩৪,৯৩৮। এই কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থীকে ৩,৩৩,৬৭৭ ভোটে পরাজিত করেছেন বিজেপি প্রার্থী।
২০১৩ সালে মানবাধিকার সংগঠন পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ-এর এক আবেদনের ভিত্তিতে নোটা বা ‘নান অফ দ্য অ্যাবাভ’ চালু হয়। অর্থাৎ কোনও কেন্দ্রের কোনও প্রার্থীকেই যদি ভোটদাতারা পছন্দ না করেন সেক্ষেত্রে তিনি নোটায় ভোট দিতে পারেন। যদিও নিয়ম অনুসারে, কোনও কেন্দ্রে যদিও নোটায় সবথেকে বেশি ভোটও পড়ে সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় বৃহত্তম ভোট যে প্রার্থী পাবেন তাঁকেই জয়ী ঘোষণা করা হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন