রাজ্যে বিকেল ৩টে পর্যন্ত ভোটদানের হারে শীর্ষে বসিরহাট কেন্দ্র। ভোট পড়েছে ৬৬.৭৬%। সবথেকে কম ভোট পড়েছে কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রে ৫০.৬১%। বিকেল ৩টে পর্যন্ত বারাসত কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৫৯.৬৯%, ডায়মন্ডহারবারে ৬১.০৮%, দমদমে ৫৩.০৬%, যাদবপুরে ৫৬.৪৯%, জয়নগরে ৬২.২৪%, কলকাতা উত্তরে ৫১.২২% এবং মথুরাপুরে ভোট পড়েছে ৬৩.৬৬%।
যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত যাদবপুর বিধানসভার ১০২ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিআইএমের ৬টি ক্যাম্প অফিসে ভাঙচুর করা হয়েছে বলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালো সিপিআইএম। এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন বাম কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সিপিআইএম-এর এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তাদের বক্তব্য, দুই পক্ষের মধ্যে মারপিট হয়েছে। অনেক তৃণমূল কর্মীও আহত হয়েছেন।
ঘটনা প্রসঙ্গে যাদবপুর কেন্দ্রের বাম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য জানান, ‘‘যেখানে যেখানে ক্যাম্প অফিস ভাঙা হয়েছে সেখানে সেখানে আবার নতুন করে ক্যাম্প অফিস বসানো হচ্ছে।’’
বেলা ১টা পর্যন্ত রাজ্যের ৯ কেন্দ্রে ভোট পড়লো ৪৫.০৭%। যার মধ্যে সবথেকে বেশি ভোট পড়েছে বসিরহাট কেন্দ্রে, ৫০.৮৯%। সবথেকে কম ভোট পড়েছে কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রে ৩৯.৭০%। এছাড়া বারাসতে ৪৭.৪৯%, ডায়মন্ডহারবারে ৪৭.৩৩%, দমদমে ৪১.০৯%, যাদবপুরে ৪৩.২৫%, জয়নগরে৪৮.২৭%, কলকাতা উত্তরে ৩৯.৪৮% এবং মথুরাপুরে ৪৭.০৩%।
অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের সপ্তম তথা শেষ দফায় সকাল ১১টা পর্যন্ত মোট ১৪৫০টি অভিযোগ জমা পড়েছে কমিশনে। অভিযোগের তালিকায় শীর্ষে সিপিআইএম। এখনও পর্যন্ত তাদের তরফে ১৪২টি অভিযোগ করা হয়েছে। কংগ্রেস অভিযোগ করেছে ৯টি। এছাড়াও বিজেপি অভিযোগ করেছে ৭৬টি। উল্লেখযোগ্যভাবে শাসক দল তৃণমূলের পক্ষ থেকে একটিও অভিযোগ করা হয়নি।
অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের সপ্তম তথা শেষ পর্বে প্রথম ৪ ঘণ্টায় বিহারে ভোট পড়লো ২৪.২৫%। চন্ডীগড়ে ভোট পড়েছে ২৫.০৩%। এদিন প্রথম ৪ ঘণ্টায় হিমাচল প্রদেশে ভোট পড়েছে ৩১.৯২%, ঝাড়খন্ডে ২৯.৫৫%, ওড়িশা ২২.৬৪%, পাঞ্জাবে ২৩.৯১%, উত্তরপ্রদেশে ২৮.০২% এবং পশ্চিমবঙ্গে ২৮.১০%।
রাজ্যে প্রথম চার ঘণ্টায় সবথেকে বেশি ভোট পড়েছে বসিরহাট কেন্দ্রে। সকাল ১১টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৩২.৫৭%। সবথেকে কম ভোট পড়েছে কলকাতা উত্তর এবং দক্ষিণ কেন্দ্রে। ২৪.০২%। এছাড়া বারাসতে ২৭.৮৬%, ডায়মণ্ডহারবারে ৩১.৫১%, দমদমে ২৪.৮৩%, যাদবপুরে ২৬.৫৯%, জয়নগরে ৩০.২৫%, মথুরাপুরে ৩০.৫০%।
বুথে বুথে পরিদর্শন করছিলেন বরাগনর উপ নির্বাচনের সিপিআইএম প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্য। বিকেসি কলেজের বুথে তাঁকে ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ উঠে এক তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। পাল্টা তাঁকে ঘাড় ধরে সরিয়ে দিলেন প্রার্থী। তৃণমূলের অভিযোগ, ভোটারদের প্রভাবিত করছিলেন তন্ময় ভট্টাচার্য। তৃণমূল কর্মীদের সাথে বচসায় জড়ান প্রার্থী।
রাস্তার বেহাল অবস্থার কথা জানিয়ে ভোট বয়কটের ডাক দিলেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার মথুরাপুর লোকসভার কাশিনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১১ নম্বর বুথের ভোটাররা। তাদের অভিযোগ, বহুদিন ধরেই রাস্তার বেহাল দশা। শাসকদলকে বলে কোনও কাজ হয়নি। তাই এই সিদ্ধান্ত।
ভোট বয়কটের খবর পেয়ে বিজেপি প্রার্থী অশোক পুরকায়েত ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান এলাকাবাসীরা।
সকাল থেকে বিক্ষিপ্ত অশান্তি চলছে রাজ্যে সপ্তম দফার ভোটে। ৯টা পর্যন্ত কমিশনের কাছে মোট ৭১৫টি অভিযোগ জমা পড়েছে। দলগতভাবে সবথেকে বেশি অভিযোগ করেছে সিপিআইএম, ৪৬টি। বিজেপি অভিযোগ জানিয়েছে ২৫টি।
সকাল ৯টা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ভোট পড়েছে ১২.৬৩ শতাংশ। যার মধ্যে বারাসতে ১২.৯৪ শতাংশ, বসিরহাটে ১৫.৬৬ শতাংশ, ডায়মন্ডহারবারে ১৪.১৬ শতাংশ, দমদমে ১০.৮৬ শতাংশ, যাদবপুরে ১৩.৪৬ শতাংশ, জয়নগরে ১৩.১৩ শতাংশ, কলকাতা দক্ষিণে ১০.১৬ শতাংশ, কলকাতা উত্তরে ৮.৯২ শতাংশ এবং মথুরাপুরে ১৩.৫৪ শতাংশ ভোট পড়েছে।
ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের আটকৃষ্ণ রামপুরের ২৭১ নম্বর বুথে এক ব্যক্তি সিপিআইএমের ভুয়ো এজেন্ট হিসেবে বুথে গিয়েছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থলে যান ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের সিপিআইএম প্রার্থী প্রতীক-উর রহমান। এরপর প্রিসাইডিং অফিসারকে বলে ওই ব্যক্তিকে বাইরে বের করে দেন তিনি। বুথের বাইরে সেই ভুয়ো এজেন্টকে পাকড়াও করতেই তার সঙ্গে হাতাহাতি বাধে প্রতীক-উরের। এরপর মুখ লুকিয়ে ওই এজেন্টকে পালিয়ে যেতে দেখা যায়। ক্যমেরায় সেই দৃশ্য ধরা পড়েছে।
দক্ষিণ কলকাতার ২৬৪ এবং ২৬৫ নম্বর বুথের সামনে সিপিআইএম নেতা কৌস্তভ চ্যাটার্জির উপর হামলা। ভাঙচুর করা হয়েছে তাঁর গাড়িতেও। অভিযোগ তৃণমূল আশ্রিত দষ্কৃতীরা হামলা চালিয়েছে।
কৌস্তভ চ্যাটার্জি জানিয়েছেন, "২৬৪ এবং ২৬৫ নম্বর বুথের সামনে ভোটারদের ধমকানো হচ্ছে, এরকম একটা অভিযোগ পেয়ে এখানে আসি। বুথের পরিস্থিতি দেখে বেরিয়ে আসার সময় তৃণমূলের বহিরাগতরা পরিকল্পিতভাবে আমার উপর হামলা চালায়। আমার গাড়ি ভাঙচুর করে। গাড়ির চালককেও মেরেছে। ভোটের লাইন থেকে সাধারণ মানুষ এসে আমাকে উদ্ধার করেছেন। এটা খুব পজিটিভ একটা বিষয়। নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি বিষয়টা।"
কুলতলিতে গ্রামবাসীদের ভোট দিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠলো তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা ইভিএম জলে ফেলে দিয়েছেন। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে কুলতলির বিধায়ক গণেশ মণ্ডল বলেন, ‘‘ভোট শান্তিপূর্ণ ভাবে হচ্ছে। বিজেপির দুষ্কৃতীরা জোর করে ইভিএম ছিনিয়ে নিয়ে গিয়ে জলে ফেলে দেয়।’’ অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী অশোক কান্ডারির দাবি, ‘‘৪০ এবং ৪১ নম্বর বুথে এজেন্ট বসতে দেয়নি শাসকদল তৃণমূল। গ্রামবাসীরা ক্ষুব্ধ হয়ে যান। মহিলারা একজোট হয়ে ইভিএম জলে ফেলে দেন।’’
উত্তর কলকাতার বেলগাছিয়ার ১৬৮/ ২৪৮ নম্বর বুথে ভোট দিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। ভোট দিয়ে বেরোতেই তাঁকে ঘিরে ‘চোর চোর’ স্লোগান ওঠে। অভিযোগ, তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা এই স্লোগান দিয়েছে।
ভোটের কয়েকদিন আগে থেকেই উত্তপ্ত রয়েছে ভাঙড়। ভোটের আগের রাতেও বিভিন্ন জায়গায় বোমাবাজি হয়েছে বলে অভিযোগ। আইএসএফের দাবি, ভাঙড়ে বিভিন্ন জায়গায় সারা রাত তাণ্ডব চালিয়েছে তৃণমূলের দলবল। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ‘হুমকি’ দিয়ে এসেছে। ভাঙড়ের রানিগাছি এলাকায় আইএসএফ প্রার্থী নুর আলম খানের গাড়ি লক্ষ্য করে হামলার অভিযোগও উঠেছে। ভাঙচুর করা হয়েছে তাঁর গাড়ি।
ভোটের দিন সকালেও ভাঙড়ের ফুলবাড়ি এলেকায় ঝামেলা বাধে আইএসএফ এবং তৃণমূলের মধ্যে।
যাদবপুরের অন্তর্গত সোনারপুর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের কুসুম্বা হাই স্কুলের ১৯১ এবং ১৯২ নম্বর বুথে সিপিআইএমের পোলিং এজেন্টদের বসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে যান সিপিআইএম প্রার্থী সৃজন ভট্টাচার্য। ওই দুই বুথে পোলিং এজেন্টদের বসিয়ে দিয়ে আসেন তিনি।
সপ্তম দফায় রাজ্যের ন’টি কেন্দ্র মিলিয়ে মোট বুথের সংখ্যা ১৭ হাজার ৪৭০টি। নির্বাচন কমিশনের হিসাবে এর মধ্যে স্পর্শকাতর বুথ ৩,৭৪৮টি।
রাজ্যে সপ্তম দফায় ন’টি কেন্দ্র মিলিয়ে মোট ৯৬৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেছে নির্বাচন কমিশন। কুইক রেসপন্স টিম থাকছে ৭৮৮টি। কলকাতার ৭২টি বহুতল থেকে নজরদারি চালাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশ।
রাজ্যে সপ্তম দফার নির্বাচনে একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী লড়াইয়ের ময়দানে আছেন। যাদের মধ্যে আছেন তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (ডায়মন্ড হারবার), সৌগত রায় (দমদম), সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় (কলকাতা উত্তর), অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ ( যাদবপুর), কাকলি ঘোষ দস্তিদার (বারাসত)। সিপিআইএমের পক্ষে এই পর্বে লড়াইয়ের ময়দানে আছেন সুজন চক্রবর্তী (দমদম), সৃজন ভট্টাচার্য (যাদবপুর), সায়রা সাহ হালিম (কলকাতা দক্ষিণ), নিরাপদ সর্দার (বসিরহাট)।
সপ্তম দফায় বাংলার নয় কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। দমদম, বারাসাত, বসিরহাট, জয়নগর, মথুরাপুর, ডায়মন্ড হারবার, যাদবপুর, কলকাতা উত্তর এবং কলকাতা দক্ষিণে ভোট আজ। সকাল ৭ টা থেকে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন