মহারাষ্ট্রে ভোটগ্রহণের আগের দিন টাকা বিলি করছিলেন বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক বিনোদ তাওড়ে। চাঞ্চল্যকর এই দাবি করেছেন বহুজন বিকাশ আঘাদির প্রতিষ্ঠাতা হিতেন্দ্র ঠাকুর। তাঁর অভিযোগ, বিভিএ-এর কর্মী সমর্থকরা বিজেপি সভাপতিকে টাকা বিলি করার সময় হাতেনাতে ধরা হয়েছে।
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে মহারাষ্ট্র বিজেপি। বিজেপি নেতা প্রবীণ ডারেকার এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে জানিয়েছেন, বিজেপি এই ধরণের কাজ করেনা।
ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় বিজেপি নেতা বিনোদ তাওড়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে নির্বাচন কমিশন। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিনোদ তাওড়ে। তিনি জানান, বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে তিনি ওই হোটেলে মিটিং করতে গেছিলেন।
বহুজন বিকাশ আঘাদির অভিযোগ বিনোদ তাওড়ের ব্যাগে ৫ কোটি টাকা ছিল। এক ভিডিওতে বিভিএ কর্মীদের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের বচসায় জড়িয়ে পড়ার ছবি দেখা গেছে। যদিও এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস রিপোর্টার।
এক এক্স বার্তায় (পূর্বতন ট্যুইটার) শ্রীনিবাস বিক্কাড় অভিযোগ করেছেন, মুম্বাইয়ের নিকটস্থ ভাসাই বিরার অঞ্চলে বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক বিনোদ তাওড়ে ভোটারদের টাকা বিলি করার সময় বহুজন বিকাশ আঘাদির কর্মী সমর্থকদের হাতে ধরা পড়েছেন।
হিতেন্দ্র ঠাকুর এক টিভি চ্যানেলে জানিয়েছেন, পাঁচ কোটি টাকা বিলি করা হয়েছে। আমি সেই ডায়েরি উদ্ধার করেছি। সেই ডায়রি আমার কাছে আছে।
তিনি আরও দাবি করেন, তাওড়ে আমাকে পঁচিশ বার ফোন করেছে এবং ক্ষমা চেয়েছে। তাঁর দাবি, অবিলম্বে এই ঘটনায় পুলিশ, প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
হিতেন্দ্র ঠাকুর ভাসাই কেন্দ্রের বিধায়ক এবং তাঁর ছেলে ক্ষিতিজ ঠাকুর নালাসোপারার বিধায়ক। এঁরা দুজনেই এই কেন্দ্রে পুনঃনির্বাচনের দাবি তুলেছেন।
জানা গেছে, মহারাষ্ট্রের পালঘড় জেলার বিরারে এক হোটেলে এই টাকা বিলির কাজ চলাকালীন তাঁদের ঘিরে ধরে বিভিএ কর্মী সমর্থকরা। হিতেন্দ্র ঠাকুর এবং তাঁর ছেলে ওই হোটেলের বাইরেই আছেন বলেও জানা গেছে। এই হোটেলেই বিনোদ তাওড়েও আছেন এবং প্রচুর পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই এই ঘটনার এক ভিডিও প্রকাশ করেছে কংগ্রেস। এক্স হ্যান্ডেলে ওই ভিডিও প্রকাশ করে কংগ্রেসের দাবি, বিজেপি টাকা বিলি করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চাইছে। যে কাজে দলের শীর্ষ নেতৃত্বও যুক্ত। এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশনের কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
এই ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়ে এনসিপি (এসপি) নেত্রী সুপ্রিয়া সুলে বলেন, এই বিজেপিই নোটবাতিল করেছিল। তারপরেও একসাথে এত নগদ টাকা কোথা থেকে এল? যদি এই ঘটনা সত্যি হয় তাহলে আমি অবাক হচ্ছি এই ভেবে যে এই ঘটনার সঙ্গে বিনোদ তাওড়ের মত বিশিষ্ট নেতাও যুক্ত।
শিবসেনা (ইউবিটি) নেত্রী প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানান, একাধিকবার উদ্ধব ঠাকরের ব্যাগ পরীক্ষা করা হচ্ছে। কিন্তু যে সত্যিকারের টাকা নিয়ে যাচ্ছে তা পরীক্ষা করা হচ্ছে না। আজ বহু মানুষের মুখোশ খুলে গেল। আমরা অপেক্ষা করছি যে বিজেপি এবং তাদের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয় তা দেখার জন্য।
আগামীকাল ২০ নভেম্বর মহারাষ্ট্র বিধানসভার ২৮৮ আসনের ভোটগ্রহণ। তার ঠিক আগের দিনের এই ঘটনায় সরগরম রাজ্যের রাজনৈতিক মহল। মহারাষ্ট্র বিধানসভার ভোটগণনা আগামী ২৩ নভেম্বর।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন