দলিত ভোট হারাচ্ছে বিজেপি। উত্তর প্রদেশের মৈনপুরি (Mainpuri) লোকসভা ও খাতৌলি (Khatauli) বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ফলাফলে তা স্পষ্ট। যা আগামীতে বিজেপিকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করতে পারে।
অবশ্য, এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি বহুজন সমাজ পার্টি (BSP) ও কংগ্রেস।
রাজনৈতিক দলগুলির তথ্য অনুসারে, মৈনপুরিতে প্রায় ১.৫ লক্ষ দলিত ভোটার রয়েছে, যারা প্রায় সবাই বিএসপি প্রভাবিত। তবে, ধীরে ধীরে এই দলিত ভোটের উপর বিএসপি দখল দুর্বল হয়ে পড়ায়, তা নানা দলে বিভক্ত হয়েছে। ফলস্বরূপ, ২০২২ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মাত্র একটি আসনে যেতে মায়াবতীর দল বিএসপি।
নির্বাচনী তথ্য অনুযায়ী, খতৈলী আসনে দলিত ভোটারের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি। এই আসনে দলিতদের সমর্থন পেতে একটি নির্বাচনী কৌশল নিয়েছিলেন রাষ্ট্রীয় লোক দল (RLD)-র জয়ন্ত সিং এবং সমাজবাদী পার্টি (SP)-র অখিলেশ যাদব। যেখানে জাট, গুর্জার এবং দলিতদের সমন্বয় দেখা গেছে।
দলিত ভোটকে টার্গেট করে SP-র সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন আজাদ পার্টির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদও। আরএলডি (RLD), এসপি (SP) এবং আজাদ পার্টি (Azad Party)-র জোটের ফলে দলিত ভোট ব্যাঙ্কে সেভাবে থাবা বসাতে পারেনি বিজেপি। উল্টে, বিজেপির সমর্থনে থাকা দলিত ভোট গিয়েছে জোটের পক্ষে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, খাতৈলী আসনের প্রায় প্রতিটি গ্রামেই জিতেছেন জোটের প্রার্থী। জোট প্রার্থী (RLD-র মদন ভাইয়া) জিতেছেন ৪৪ টি বুথে, অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী (বিক্রম সিং সাইনির স্ত্রী রাজকুমারী সাইনি) জিতেছেন ২৫ টি বুথে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিজেপি ভুল প্রার্থী নির্বাচন করেছে, যার জেরে এই কেন্দ্রে জয়ের সম্ভাবনা নষ্ট হয়েছে।
দলিত ভোট টানতে আসরে নেমেছিলেন একাধিক হেভিওয়েট বিজেপি নেতা। কিন্তু, জোটের সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কারণে বিজেপির সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
সিনিয়র রাজনৈতিক বিশ্লেষক রাজেন্দ্র সিং বলেন, বিএসপি’র কোনও প্রার্থী না থাকায়, এই আসনে আজাদ সমাজ পার্টির সঙ্গে হাত মেলায় জোট এবং প্রতিটি গ্রামে তাঁরা প্রচার করে।
সমাজবাদী পার্টির এক প্রবীণ কর্মী জানান, অখিলেশ যাদবের কৌশল, গ্রাম পরিদর্শন সহ মৈনপুরিতে মুলায়ম সিং যাদবকে ঘিরে যে আবেগ আছে মানুষের মনে, তা থেকে উপকৃত হয়েছে দল। এছাড়া, দলিত ক্যাডার এবং নেতাদের নিয়ে একটি নতুন গ্রুপ তৈরি করা হয়েছিল, যারা গ্রামবাসীদের সংবিধান এবং মুলায়ম সিংয়ের কাজগুলি মনে করিয়ে দিয়েছিলেন। যার ফলে বিশাল জয় পেয়েছে দল।
সিনিয়র রাজনৈতিক বিশ্লেষক পি.এন. দ্বিবেদী বলেন, মৈনপুরিতে সমাজবাদী পার্টির জয়ের পিছনে দলিত ভোটের ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না।
তিনি বলেন, মুসলিম, গুর্জার, জাট এবং দলিত ভোটের একটি শক্তিশালী জোট বিজেপির জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন