আসন্ন লোকসভার জন্য ঘোষিত হয়ে গেছে রাজ্যের ৪২ টি আসনে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা। এরপর থেকেই দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে দলের অন্দরে। এইবার সেই রেশ পড়ল দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতেও। টিকিট না পেয়ে হাওড়ার প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় (বাবুন)। তাঁর দাবি, প্রসূনের মতো 'বাজে লোককে' টিকিট দেওয়াই উচিত হয়নি।
শোনা গিয়েছিল, এবার প্রাক্তন ফুটবলার প্রসূন বন্দোপাধ্যায়কে আর হাওড়া থেকে প্রার্থী করবে না তৃণমূল। অন্যদিকে গত কয়েক বছরে এক প্রকার হাওড়া চষে বেড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর ভাই স্বপন। আশা করেছিলেন তিনি টিকিট পাবেন। কিন্তু পেলেন না। প্রসূনেই আস্থা রাখল তৃণমূল।
মঙ্গলবার রাতে ময়দানে এক ফুটবল অনুষ্ঠানে এক সংবাদ মাধ্যমে কথা বলার সময় মুখ্যমন্ত্রীর ভাই জানান, “প্রসূন ব্যানার্জীকে হাওড়ায় প্রার্থী করা ঠিক হয়নি। ও ছাড়াও ওখানে অনেক যোগ্য লোক ছিল। আমি মানুষের কাজ সবসময় করি, আর করতেও চাই।“
সম্প্রতি টিকিট না পেয়ে বাবুনের বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে জল্পনার সৃষ্টি হয়েছিল। এদিন সেই জল্পনা উড়িয়ে স্বপন বলেন, "বিজেপি-তে যোগদানের খবরের কোনও সত্যতা নেই। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যাইনি কখনও, যাবও না। ১৯৮১ সাল থেকে দলে আছি। কখনও দলের বিরুদ্ধে যাইনি। যতদিন দিদি বেঁচে থাকবেন আমি তৃণমূলে থাকব। আর তৃণমূলের কাজ করব।“
এখানেই শেষ নয়। এদিন তিনি প্রসূন ব্যানার্জী প্রসঙ্গে আরও বলেন, "একটা মানুষ যিনি, ক্লাস ফাইভ পাশ করতে পারেন না, তাঁকে স্নাতক করে পাশ করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। হাওড়ার মানুষ ওঁকে মেনে নিচ্ছেন কি না জানি না আমি। কিন্তু আমি বলতে পারি, এই প্রার্থী ঠিক হয়নি।"
নিজের আপত্তির কথা কেন দিদিকে জানাননি, এর জবাবে স্বপন বলেন, "কিছু জিনিস জানিয়েও লাভ হয়নি। দিদিমণির হাত যখন রয়েছে মাথার উপর, আমি জানি একটা দিন ভাল সময় আসবেই।"
প্রসূনের বিরুদ্ধে আরও ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, “সাংসদ তহবিলের কোনও টাকা শেষ করতে পারেন না প্রসূন। মানুষের মধ্যে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা নেই যথেষ্ট। প্রসূনের চেয়ে অনেক যোগ্য প্রার্থী হাওড়ায় ছিল।“
প্রসঙ্গত স্বপন বন্দোপাধ্যায় কলকাতা ময়দানে একাধিক পদের অধিকারী। মোহনবাগানের ফুটবল সচিব, বেঙ্গল হকির সভাপতি, বেঙ্গল অলিম্পিক এসোসিয়েশনের সভাপতি পদে রয়েছেন তিনি। এছাড়াও একাধিক পদ অধিকার করে আছেন স্বপন। প্রসূনের সঙ্গে স্বপনের সম্পর্ক ভালো নয় কখনওই। ২০১৯ সালে মোহনবাগান নির্বাচনে দুজনে একপ্রকার হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন, সেই ভিডিও এখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যায়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন