কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা সত্বেও একাধিক হিংসার ঘটনা ঘটলো মণিপুর বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফায়। সোমবার ৬০ আসন বিশিষ্ট মণিপুর বিধানসভার জন্য প্রথম দফায় ৩৮ আসনে ভোটগ্রহণ হয়। কমিশন সূত্রে জানা গেছে প্রথম দফায় ৭৮.০৩ শতাংশ ভোট পড়েছে।
রাজ্যের যে পাঁচটি জেলায় প্রথম দফার নির্বাচন হয়েছে তার মধ্যে, সবচেয়ে বেশি ৮২.১৯ শতাংশ ভোটার তাদের ভোট দিয়েছেন ইম্ফল পশ্চিম এবং কাংপোকপি জেলায়। ইম্ফল পূর্বে ৭৬.৬৪ শতাংশ, চুরাচাঁদপুরে ৭৪.৪৫ শতাংশ এবং বিষ্ণুপুরে ৭৩.৪৪ শতাংশ ভোট পড়েছে৷ ইম্ফলের পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন চুরাচাঁদপুর জেলায় দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত একজন আহত হয়েছে।
ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম এবং কাংপোকপি জেলার বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষ ও হামলার খবর পাওয়া গেছে, তবে নিরাপত্তা বাহিনী অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করে পরিস্থিতি দ্রুত মোকাবিলা করেছে।
সিংগাটে কিছু ব্যক্তি একটি ইভিএম নষ্ট করে দেয় এবং পরে এই ইভিএম প্রতিস্থাপন করা হয়। কংগ্রেস কর্মীরা ইম্ফল পশ্চিম জেলার লাংথাবাল নির্বাচনী এলাকার কাকওয়া এলাকায় একটি ভোটকেন্দ্রে ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ। অন্যদিকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থীর গাড়ি কেইরাও আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী দলের কর্মীরা ভাঙচুর করেছে। যদিও এই ঘটনায় কেউ আহত হয়নি।
কংগ্রেস, বিজেপি প্রার্থী ও নেতারা দলীয় নির্বাচনী বুথ ভাংচুর এবং হিংসার আশ্রয় নেওয়ার অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ করেছেন। জানা গেছে, ফুনাল মারিং ভোটকেন্দ্রে কিছু দুর্বৃত্তের গুলি চালিয়েছে। তবে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ এখনও পাওয়া যায়নি।
নির্বাচনী আধিকারিকরা জানিয়েছেন, মণিপুরের এক পুলিশ হাবিলদার নওরেম ইবোচৌবা সিং কাকচিং জেলায় নির্বাচনী ডিউটি করার সময় আচমকাই সার্ভিস রাইফেল থেকে গুলি চলায় মৃত্যু হয়েছে।
মণিপুরের গভর্নর লা গণেশন, মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিং, উপ-মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই. জয়কুমার, স্পিকার ওয়াই. খেমচাঁদ, রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি এন. লোকেন তাদের নিজ নিজ ভোটকেন্দ্রে সকালেই ভোট দিয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং, যিনি হেইনগাং বিধানসভা কেন্দ্র থেকে কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী পঙ্গিজাম শরৎচন্দ্র সিংয়ের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, ভোট দেবার পর তিনি জানান বিজেপি নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ে ৩০ টিরও বেশি আসন পাবে।
সোমবার প্রথম পর্যায়ের ভোটে ১৫ জন মহিলা প্রতিদ্বন্দ্বীসহ ১৭৩ জন প্রার্থী নির্বাচনী ময়দানে ছিলেন। প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি প্রার্থী এন. বীরেন সিং, তাঁর মন্ত্রিসভার সহকর্মী থংগাম বিশ্বজিৎ সিং, এনপিপি প্রার্থী ও উপমুখ্যমন্ত্রী ইউমনাম জয়কুমার সিং, সিনিয়র বিজেপি নেতা থোকচম সত্যব্রত সিং, কংগ্রেসের রতনকুমার সিং, লোকেশ্বর সিং, শরৎচন্দ্র সিং, আকোইজাম মীরাবাই দেবী।
ফায়ারব্র্যান্ড মহিলা নেত্রী এবং জনতা দলের (ইউনাইটেড) প্রার্থী থাউনাওজাম বৃন্দা, যিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) ছিলেন, তিনিও ইয়াইসকুল আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
ফেস মাস্ক ব্যবহার, স্যানিটাইজার, শারীরিক দূরত্ব এবং থার্মাল স্ক্রিনিং সহ ভোটগ্রহণ কর্মীদের এবং ভোটারদের জন্য কোভিড-১৯ প্রোটোকল যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, ৩৮ টি বিধানসভা কেন্দ্রে ১০,০৪১ জন শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী নির্বাচক (PwD) এবং ২৫১ জন শতবর্ষী ভোটার রয়েছেন। আধিকারিক আরও জানিয়েছেন ৩৮১টি ভোট কেন্দ্র সম্পূর্ণরূপে সমস্ত মহিলা ভোটকর্মীদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন