মিজোরামের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন জোরাম পিপলস মুভমেন্টের (ZPM) প্রধান লালডুহোমা। যিনি আবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর দেহরক্ষী ছিলেন।
মিজোরামে যে এই বছর পালাবদল হতে চলেছে তা এক প্রকার নিশ্চিত ছিল। ১৯৮৭ সালে মিজোরাম গঠনের পর থেকেই হয় কংগ্রেস ক্ষমতায় থাকে নয়তো মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (MNF) ক্ষমতা দখল করে আসছে। ১৯৯৩ সাল থেকে কংগ্রেসের লালথানহাওলা এবং এমএনএফ-র জোরামথাঙ্গার মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর লড়াই হয়েছে। কিন্তু সকল প্রথা ভেঙে মিজোরামের ক্ষমতা দখল করলো জেডপিএম। ৪০ আসন বিশিষ্ট মিজোরামে ২৭টি জিতেছে জেডপিএম। এমএনএফ-র ঝুলিতে গেছে ১০টি আসন, বিজেপি জিতেছে ২টি এবং কংগ্রেস জিতেছে মাত্র ১টি আসন।
সেরচিপ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন লালডুহোমা। তিনি মোট ভোট পেয়েছেন ৮৩১৪টি। জিতেছেন ২৯৮২ ব্যবধানে। তিনিই মুখ্যমন্ত্রী পদের প্রধান দাবিদার। তাঁর দল এই প্রথম স্বীকৃত দল হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। ২০১৮ সালে নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে কোনো স্বীকৃতি ছিল না জেডপিএম-র। নির্দল হিসেবে ৩৮ জনকে প্রার্থী করেছিল জেডপিএম। ২০২১ সালে সারচিপ উপনির্বাচন থেকে মূলত এই দলের উত্থান। উপনির্বাচন জিতেছিলেন লালডুহোমা।
২০২১ সালের পর থেকে ফিরে তাকাতে হয়নি লালডুহোমাকে। নিজের সংগঠনকে আরও মজবুত করতে থাকেন তিনি। যার ফল ২০২৩ সালে এসে পেলেন। এই লালডুহোমা ছিলেন ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর দেহরক্ষী। একজন দক্ষ আইপিএস অফিসারও। নিজের পুরনো দল কংগ্রেসকে পেছনে ফেলে প্রমাণ করলেন কেন ইন্দিরা গান্ধী তাঁকে দক্ষ প্রশাসক হিসেব চিহ্নিত করেছিলেন। ১৯৮২ সালে ইন্দিরা গান্ধীর নিরাপত্তা রক্ষী হিসবে নিযুক্ত হন লালডুহোমা। তার আগে তিনি গোয়াতে কাজ করছিলেন। পরে ১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গান্ধীই লালডুহোমাকে মিজোরাম থেকে কংগ্রেসের টিকিটে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী করেছিলেন। জয়ীও হয়েছিলেন লালডুহোমা।
এরপর কংগ্রেস ছেড়ে নিজের দল জোরাম ন্যাশনালিস্ট পার্টি গঠন করেছিলেন। ২০০৩ সালে ওই দলের হয়ে বিধায়কও হয়েছিলেন লালডুহোমা। ২০২৩ বিধানসভা নির্বাচনে জিতে সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ গ্রহণ করতে চলেছেন লালডুহোমা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন