উত্তর ভারতের তিন রাজ্যে ভরাডুবির পর কংগ্রেসের নির্বাচনী রণকৌশল নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল রাজনৈতিক মহলে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়া জোটকে কোনও গুরুত্ব দেয়নি কংগ্রেস। যার ফলে তিন রাজ্যের নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে ইন্ডিয়া মঞ্চের অংশীদার সমাজবাদী পার্টিকে সঙ্গে না নিয়ে নির্বাচনে লড়া, মধ্যপ্রদেশে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর (ওবিসি) ইস্যুটি উত্থাপন করা কংগ্রেসের খারাপ ফলাফলের কারণ।
প্রসঙ্গত, মধ্যপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়া মঞ্চের সদস্য সমাজবাদী পার্টি জোট বেঁধে এই নির্বাচনে লড়ার দাবি জানিয়েছিল এবং কংগ্রেসের কাছে ৬টি আসন দাবি করেছিল। যদিও কংগ্রেস সেই দাবি মানেনি। মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমলনাথ সমাজবাদী পার্টিকে কোনও গুরুত্ব দিতে চাননি। যার পরে ইন্ডিয়া মঞ্চে ফাটল দেখা দেয়।
কংগ্রেসের প্রত্যাখ্যানের পর সমাজবাদী পার্টি মধ্যপ্রদেশে ৬৯ আসনে প্রার্থী দেয় এবং পরে ৩ আসন থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেয়। নির্বাচনী সমীক্ষকদের মতে উত্তরপ্রদেশের সীমান্তবর্তী আসনগুলোতে এর ফলে কংগ্রেসের সম্ভাবনা কমেছে।
এছাড়াও কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী যেভাবে ওবিসি-দের বিষয়টি নির্বাচনী প্রচারে যেভাবে তুলে এনেছিলেন তাতেও জনমানসে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে মনে করছে কিছু মহল। তাঁদের মতে, যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান নিজেই এই সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করেন তাই মধ্যপ্রদেশের ওবিসি ভোটাররা বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয়নি।
মধ্যপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে ৫০ শতাংশ দুর্নীতির অভিযোগ এনে কর্ণাটকের আদলে চৌহান এবং বিজেপিকে নিশানা করলেও মধ্যপ্রদেশে সেই ফর্মুলা কাজ করেনি।
এছাড়াও নির্বাচনী প্রচারে রাজ্যের প্রতিটি মহিলাকে মাসে ১,৫০০ টাকা দেওয়ার কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতির চেয়ে শিবরাজ সিং চৌহানের নেতৃত্বাধীন সরকারের ‘লাডলি বহেন’ প্রকল্পে আস্থা রেখেছেন মধ্যপ্রদেশের ভোটাররা।
অন্য কিছু রাজনৈতিক দলের নেতারা মনে করেন যে কমলনাথের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা কংগ্রেসের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়েছে। নির্বাচনী ফলাফলের প্রবণতায় তা আরও স্পষ্ট হয়েছে।
কংগ্রেস মধ্যপ্রদেশের জনগণের কাছে ১১টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে পুরানো পেনশন স্কিম (OPS), ৫০০ টাকায় এলপিজি সিলিন্ডার, ১০০ ইউনিট বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, মহিলাদের প্রতি মাসে ১,৫০০ টাকা ইত্যাদি।
এছাড়াও কংগ্রেসের নির্বাচনী কৌশলবিদ সুনীল কানুগোলু, যিনি মধ্যপ্রদেশে দলের প্রচারের মূল দায়িত্বে ছিলেন তিনিও শেষ মুহূর্তে দায়িত্ব ছেড়ে দেন। যা কংগ্রেসের পক্ষে ক্ষতিকর হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন