বিজেপি বিরোধী মহাজোটের তৃতীয় বৈঠকের আর হাতে গোনা কয়েকটা দিন বাকি। আগামী সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দেশের বাণিজ্যনগরী মুম্বইয়ে বসবে বিরোধী INDIA শিবিরের মহাবৈঠক। তার মাত্র কয়েকদিন আগেই তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করলেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার। শুক্রবার তিনি জানালেন, “ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (NCP)-তে কখনই কোনও ভাঙন ধরেনি।” উল্লেখযোগ্যভাবে, বৃহস্পতিবার এই একই মন্তব্য করেন এনসিপির কার্যনির্বাহী সভাপতি তথা শরদ-কন্যা সুপ্রিয়া সুলে।
আগামী ৩১ আগস্ট ও ১ সেপ্টেম্বর বিজেপি বিরোধী শিবিরের বৈঠকের জন্য মুম্বইয়ে জড়ো হবেন ২৫টিরও বেশি বিজেপি বিরোধী দলের ৮০ জনেরও বেশি শীর্ষ স্থানীয় নেতা। তার কয়েকদিন আগেই এনসিপি-এর ভাঙন নিয়ে শরদ পাওয়ার ও তাঁর কন্যা সুপ্রিয়া সুলের মন্তব্য ঘিরে ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। শুক্রবার মহারাষ্ট্রের বরামতিতে গিয়ে শরদ পাওয়ার সাংবাদিকদের এই সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তরে জানান, “আমাদের দলের কোনও কোনও নেতা ভিন্ন অবস্থান নিয়েছেন। এখন সে (অজিত পাওয়ার) দলের বিরুদ্ধে গিয়ে দাঁড়িয়েছে, তার মানে এই নয় যে দল ভেঙে গেছে। আমরা এই নিয়ে বিধানসভার স্পিকারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি এবং তাঁর প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় আছি।”
প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসের একেবারে শুরুর দিকে এনসিপির অন্যতম হেভিওয়েট নেতা তথা শরদ পাওয়ারের ভাইপো অজিত পাওয়ার দলের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে দলের একগুচ্ছ বিধায়কের সমর্থন নিয়ে আলাদা হয়ে যান। একনাথ শিন্ডের শিবসেনা গোষ্ঠী ও বিজেপির নেতৃত্বাধীন মহারাষ্ট্রের জোট সরকারকে নিজেদের সমর্থন জানান। বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়নবিসের সঙ্গে যুগ্মভাবে রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হন অজিত। তবে এরপরে এনসিপি দলের প্রতিষ্ঠাতা শরদ পাওয়ারের সঙ্গে বারবার দেখা করায় অজিত ও শরদ দুজনেরই অবস্থান নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার এনসিপির কার্যনির্বাহী সভাপতি তথা বরামতির সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে জানান, “এনসিপিতে কোনও ভাঙন ধরেনি। আমাদের একটিই দল, একভাগ ক্ষমতায় রয়েছে এবং অন্যভাগ রয়েছে বিরোধীপক্ষে। অজিত পাওয়ারই আমাদের দলের নেতা।” বিরোধী শিবিরের বৈঠকের কয়েকদিন আগেই শরদ-কন্যার এই মন্তব্য ঘিরে মুহূর্তে তোলপাড় শুরু হয়ে যায় রাজ্য-রাজনীতিতে। এরপর শুক্রবার শরদ পাওয়ারও সেই মন্তব্যকেই সমর্থন করলেন।
সুপ্রিয়ার মন্তব্য নিয়ে সাংবাদিকরা পাওয়ারের কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, “একদম ঠিক, এই নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। কী করে কেউ বলতে পারেন যে এনসিপি ভেঙে গিয়েছে? অজিত পাওয়ারই আমাদের দলের নেতা, এই নিয়ে কোনও প্রশ্ন থাকতে পারে না।” তার আরও বক্তব্য, “একটা রাজনৈতিক দলে ভাঙন মানে কী? যখন কোনও দলের একটা বড় অংশ জাতীয় স্তরে দলের থেকে আলাদা হয়ে যায়। কিন্তু এখানে সেরকম কিছুই হয়নি। কিছু মানুষ দল ছেড়েছেন আর কিছু মানুষ দলের থেকে ভিন্ন অবস্থান নিয়েছেন। গণতন্ত্রে সবারই সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন