‘বিজেপি শাসনে দাঙ্গা হয় না’ বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যে মন্তব্য করেছেন তাকে ‘আরেকটি জুমলা’ বলে দাবি করেছেন রাজ্যসভার সাংসদ কপিল সিব্বল। একইসঙ্গে, সোমবার, বিজেপির শাসন আমলে বিভিন্ন রাজ্যের সাম্প্রদায়িক হিংসার পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন তিনি।
সম্প্রতি, বিহারের নওয়াদা জেলার হিসুয়াতে এক জনসভায় অমিত শাহ বলেন, ‘২০২৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাথে ক্ষমতায় ফিরে আসতে দিন, ৪০টি আসনের মধ্যে (বিহারে) ৪০টি দিয়ে দিন এবং বিজেপিকে নিজের সরকার গঠনে সহায়তা করুন। ২০২৫ সালে বিহার বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে নিজের সরকার গড়তে সাহায্য করুন। তারপর, দাঙ্গাবাজদের উল্টো ঝুলিয়ে সোজা করার কাজ বিজেপি করবে।’
এরপরে অমিত শাহ দাবি করেন, ‘আমাদের শাসনে দাঙ্গা হয় না।’ তাঁর এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রাজ্যসভার সাংসদ সিব্বল বলেন, ‘'আমাদের শাসনে দাঙ্গা হয় না' বলে যে দাবি করেছে অমিত শাহ, তা হল বিজেপির আরেকটি জুমলা (ভণ্ডামি)।’
এদিন, ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ড ব্যুরো-র তথ্য তুলে ধরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ২০১৪ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে (NCRB ডেটা অনুসারে) মোট ৫৪১৫ টি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা রিপোর্ট করা হয়েছে। শুধুমাত্র ২০১৯ সালে সারাদেশে ২৫ টি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে, বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে ৯ টি, মহারাষ্ট্রে ৪ টি এবং মধ্যপ্রদেশে ২ টি সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সংঘটিত হয়েছে। এছাড়া, সাম্প্রদায়িক হিংসার নিরিখে ২০২১ সালে শীর্ষে ছিল হরিয়ানা এবং, ২০২২ সালের এপ্রিল নাগাদ গুজরাট ও মধ্যপ্রদেশ।’
একইসঙ্গে, রাম নবমীতে পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারে সাম্প্রদায়িক হিংসা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘নিরবতা’ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। রবিবার, সিব্বল বলেন, 'এই ঘটনা যেন ২০২৪ সালের কারণ না হয়।'
তিনি বলেন, 'আমি চাই যেন প্রধানমন্ত্রী এ নিয়ে কথা বলুক। আমি চাই অমিত শাহ যেন এ নিয়ে কথা বলেন এবং ঘটনার নিন্দা করেন। কিন্তু, এত হিংসার মাঝেও তাঁরা কোনো কথা বলছেন না। তাঁরা একেবারে চুপ করে রয়েছেন। এই সময় মোদী, অমিত শাহ নীরব কেন?'
ইউপিএ-১ ও ২ শাসনকালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন কপিল সিব্বল। গত বছরের মে মাসে কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। এরপর, সমাজবাদী পার্টির সমর্থনে রাজ্যসভায় সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি। সম্প্রতি, বিজেপির শাসনে ন্যায়বিচার না পাওয়া মানুষদের আইনি সুরাহা দিতে ‘ইনসাফ’ নামে একটি মঞ্চ গঠন করেছেন তিনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন