দ্বিতীয় দফা ভোটের আগে অস্বস্তিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। 'অনুপ্রবেশকারীদের সম্পদ বিলি' মন্তব্যের জেরে এবার প্রায় সাড়ে সতেরো হাজার আমজনতা নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিলেন। কমিশন সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখছে বলে জানা গেছে।
গত রবিবার নির্বাচনী প্রচারে রাজস্থানের বাঁশওয়ারায় যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রচারে গিয়ে মোদী বলেন, “সরকারে থাকাকালীন কংগ্রেস বলেছিল দেশের সম্পদের উপর মুসলিমদের অধিকার সকলের আগে। অর্থাৎ দেশের সম্পদ বন্টন করা হবে তাদের মধ্যে, যাদের পরিবারে বেশি সন্তান রয়েছে। অনুপ্রবেশকারীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে দেশের সম্পদ।“
এরপরেই কংগ্রেসের ইস্তেহারের কথা উল্লেখ করে মোদী বলেন, “কংগ্রেসের ইস্তেহারেই বলা হয়েছে, মা-বোনদের সোনার গয়নার হিসেব করে সেই সম্পদ বিতরণ করা হবে। মনমোহন সিংয়ের সরকার তো বলেই দিয়েছে, দেশের সম্পদে অধিকার মুসলিমদেরই। মা-বোনেদের মঙ্গলসূত্রটাও বাদ দেবে না।”
একাধিক মিডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোদীর এই মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছেন ১৭,৪০০ আম জনতা। চিঠিতে বলা হয়েছে, ২১ এপ্রিল রাজস্থানে প্রধানমন্ত্রী যে নির্বাচনী ভাষণ দিয়েছেন তাতে আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়েছে। লক্ষ লক্ষ ভারতীয় জনগণের ভাবাবেগে আঘাত হেনেছেন উনি। ভাষণটি বিপজ্জনক এবং ভারতের মুসলমানদের উপর সরাসরি আক্রমণ।
চিঠিতে আরও হয়েছে, "মুসলমানদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের মধ্যে বিদ্বেষকে উস্কে দেওয়া ও উত্তেজিত করার লক্ষ্যে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মন্তব্য করেছেন নরেন্দ্র মোদী। কমিশন যদি এই ধরনের ঘৃণাত্মক বক্তব্যের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে কমিশন তার বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে।"
উল্লেখ্য, মোদীর এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে আগেই নির্বাচনে কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছে কংগ্রেস। মোদীর বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির অভিযোগ এনেছে তারা। মোদীর সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সোমবার রাহুল গান্ধী নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোষ্ট করে লেখেন, “প্রথম দফার ভোট শেষ হতেই হতাশ হয়ে পড়েছেন মোদি। সেই জন্যই মিথ্যা কথা বলে আমজনতার নজর ঘোরাতে চাইছেন। কিন্তু দেশের মানুষ সমস্ত সমস্যার কথা মাথায় রেখেই ভোট দেবেন।”
সূত্রের খবর, সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখছে কমিশন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন