পাঞ্জাবের ভোট হতে বাকি আর মাত্র মাসখানেকের কিছু বেশি। সব রাজনৈতিক দলই নিজেদের মতো করে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু এরই মধ্যে ভোট পিছনোর দাবি তুলে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে। সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি ১৪ ফেব্রুয়ারি বদলে ৬ দিন পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন।
আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কাছে। কারণ ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ ভাবে ক্ষমতায় আসার পর বিধানসভা নির্বাচনগুলিতে আশানুরূপ ফল হয়নি গেরুয়া শিবিরের। তাই দেশীয় রাজনৈতিক মহলের মতে, এই বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল বিজেপির কাছে প্র্যাক্টিস ম্যাচের মতো।
উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পাঞ্জাব, মণিপুর ও গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচন হবে চলতি বছরেই। গত ৮ জানুয়ারি ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। পাঞ্জাবেও নির্বাচন হতে চলেছে। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র জানিয়েছেন, আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি এক দফায় ভোটগ্রহণ হবে পাঞ্জাবের ১১৭টি আসনে। সেসময় ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কোনও আপত্তি ওঠেনি। বরং, মুখ্যমন্ত্রী নিজে কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। কিন্তু শনিবার হঠাৎ অবস্থান বদলে যায় মুখ্যমন্ত্রীর। ভোট পিছোনোর দাবি তুললেন তিনি।
কেন হঠাৎ পাঞ্জাব মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনের দিনক্ষণ পিছনোর জন্য চিঠি দিলেন? তাঁর বক্তব্য, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পাঞ্জাবের দলিত শিখদের ধর্মগুরু রবিদাসের জন্মজয়ন্তী। এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রায় ২০ লক্ষ দলিত শিখ বেনারসে তীর্থ করতে যাবেন। তাঁরা আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকেই তীর্থে বেরিয়ে পড়বেন। ফলে যদি ১৪ ফেব্রুয়ারি ভোট হয়, তাহলে এই ভোটাররা তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না।
তাই নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন, ১৪ ফেব্রুয়ারির বদলে ৬ দিন পিছিয়ে নির্বাচন করা হোক। যাতে ওই ২০ লক্ষ ভোটার বেনারস থেকে ফিরে এসেও নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। তবে ভোট পর্বের ঠিক আগে মুখ্যমন্ত্রীর এই দাবি কমিশনের পক্ষে মানা সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী চান্নি নিজেও এই দলিত শিখ সম্প্রদায়ের নেতা। এই নির্বাচনে জিতে ফের কংগ্রেসকে ক্ষমতায় আসতে হলে রাজ্যের ৩২ শতাংশ দলিত ভোটার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। এদিকে উচ্চবর্ণের জাঠ শিখদের ভোটের একটা বড় অংশ যায় অকালি দলের খাতায়। সেখানেও কংগ্রেসের পাশাপাশি ভাগ বসাবে আপ। তাই ক্ষমতায় ফিরতে এই ৩২ শতাংশ দলিত শিখদের ভোট কংগ্রেসের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন