‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’র সমাপ্তি ভাষণে রাহুল গান্ধীর নিশানায় বিজেপি ও মোদী সরকার। রবিবার মুম্বাইয়ের শিবাজী পার্কের সমাবেশে মোদী সরকারকে নিশানা করতে গিয়ে রাহুল বলেন ইভিএম কারচুপির কথা। তিনি বলেন, "রাজার প্রাণভোমরা রয়েছে বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রের মধ্যে।“এরপরেই ইডি, সিবিআইয়ের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “আর প্রাণভোমরা রয়েছে ইডি, সিবিআই এবং আয়কর দপ্তরে।“
মণিপুর থেকে শুরু হওয়া ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ রবিবার শেষ হয় মুম্বাইতে। যাত্রার শেষ সমাবেশ হিসেবে মুম্বাইয়ের শিবাজী পার্কে এক বিশাল সমাবেশে ভাষণ দেন রাহুল গান্ধী, তেজস্বী যাদব, এম কে স্ট্যালিন সহ ইন্ডিয়া মঞ্চের একাধিক নেতৃত্ব। এদিন ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’র মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ইন্ডিয়া মঞ্চের বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব। উপস্থিত ছিলেন বামপন্থীরাও। ছিলেন সোনিয়া গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও।
এদিনের সমাবেশে রাহুল গান্ধী বলেন, "আমরা কোনও নির্দিষ্ট দল বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছি না। লড়াই করছি শক্তির বিরুদ্ধে।” সেই শক্তি সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি সদ্য কংগ্রেসত্যাগী মহারাষ্ট্রের অশোক চাহ্বাণের কথা উল্লেখ করে বলেন, "উনি দল ছাড়ার সময় আমার মা সোনিয়াজীর সঙ্গে দেখা করে বলেছিলেন যে তাঁর সেই ক্ষমতা নেই যে ওই শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করবেন। তিনি জেলে যেতে চান না। তবে তিনি একা নন, এরকম কয়েকশো বিরোধী দলের নেতাকে বিভিন্নরকম হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।“
এরপরেই 'ভারত জোড়ো যাত্রা'র পর 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা' কেন করতে হলো তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। তিনি জানান, "সংবাদমাধ্যমে দেশের জ্বলন্ত সমস্যার কথা তুলে ধরছে না। তারা বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতি, হিংসা, কৃষকদের সমস্যা, অগ্নিবীর প্রশ্নে সম্পূর্ণ নীরব। তারা মোদী ভজনায় ব্যস্ত থাকে সারাক্ষণ। এসব কথা আপনাদের সামনে তুলে ধরার জন্যই আমাদের এই ৪ হাজার কিলোমিটার পথ হাঁটা।"
এদিনের মঞ্চে রাহুল গান্ধী ছাড়াও ভাষণ দেন ইন্ডিয়া মঞ্চের একাধিক নেতৃত্ব। আরজেডি নেতা তথা বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব রাহুল গান্ধীর সুরেই বলেন, "ইন্ডিয়া মঞ্চ মোটেই নরেন্দ্র মোদী কিংবা অমিত শাহ নামক ব্যক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছে না। লড়াই করছে ঘৃণার মতাদর্শের বিরুদ্ধে। তাই এই মুহূর্তে প্রয়োজন দেশের বৈচিত্র এবং ভ্রাতৃত্ববোধকে সুরক্ষিত রাখা।"
অন্যদিকে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন ‘নির্বাচনী বন্ড’কে ‘ভদ্রলোকের দুর্নীতি’ বলে কটাক্ষ করেন। এরই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, ‘‘ইন্ডিয়া জোট গঠন হবে। এই জোট ভারতের জন্যই। ভারতের এখন এই ঐক্যের দরকার। নির্বাচন ঘোষণা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য বিজেপিকে হারানো। দেশের কাছে সবচেয়ে বড় হুমকি হল বিজেপি।’’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন