কদিন আগেই বিজেপি রাজস্থান রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল সতীশ পুনিয়াকে। এবার দলের রাজ্য দপ্তরের সামনের পোষ্টার থেকে সরিয়ে দেওয়া হল তাঁর ছবি। বদলে পোষ্টারে স্থান পেলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া। এর আগে চিতোরগড়ের সাংসদ সি পি জোশীকে রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়।
বিজেপি রাজ্য অফিসের বাইরের সাম্প্রতিক পোস্টারগুলিতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের ছবি রাখা হলেও সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বিদায়ী সভাপতি সতীশ পুনিয়ার ছবি। ভোটমুখী রাজ্যে যে ঘটনাকে বিশেষ ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই দেখছে রাজনৈতিক মহল।
এর আগে সতীশ পুনিয়া বিজেপি রাজস্থানের সভাপতি হওয়ার পর দলের সদর দফতরের পোস্টার থেকে বসুন্ধরা রাজের ছবি সরিয়ে দেওয়া হয়। এই বছরের জানুয়ারিতে, বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা যখন রাজস্থান সফরে গিয়েছিলেন, তখন আবার বিজেপি সদর দফতরের পোস্টারগুলিতে বসুন্ধরা রাজের ছবি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরপর থেকেই দলীয় রাজনীতির পরিবর্তন নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়।
রাজস্থানে বিজেপি সদর দপ্তরের বাইরের নতুন ছবিগুলিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা, নবনিযুক্ত রাজ্য প্রধান সিপি জোশী এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজেকে স্থান দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত তিন বছর ধরে সদ্য প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি সতীশ পুনিয়ার ছবি বিজেপি রাজ্য দফতরের বাইরের পোস্টারে থাকত। এবার এই ছবি সরিয়ে নেওয়ায় দলের রাজ্য রাজনীতিতে পুনিয়া গোষ্ঠী অনেকটাই পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
রাজস্থান বিজেপির আভ্যন্তরীণ সমীকরণে বসুন্ধরা রাজে এবং সতীশ পুনিয়া গোষ্ঠীর বিবাদ সুপরিচিত। পুনিয়া সভাপতি থাকাকালীন বিজেপির একাধিক সভায় যোগ দেননি বসুন্ধরা রাজে।
গত ৪ঠা মার্চ নিজের জন্মদিনে বিশেষ অনুষ্ঠানের ডাক দিয়েছিলেন বসুন্ধরা। অন্যদিকে ওইদিনই তৎকালীন সভাপতি সতীশ পুনিয়া মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন ঘেরাওয়ের কর্মসূচী ঘোষণা করেন। সমস্ত বিধায়ককে ওই কর্মসূচীতে যোগ দেবার নির্দেশ দেওয়া হয়। কারণ বিধানসভা নির্বাচনের আগে বসুন্ধরা রাজের এই জন্মদিনের অনুষ্ঠানকে শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যম হিসাবে দেখেন অনেকেই। রাজস্থানের দুই বারের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে। ভোট রাজনীতির বিচারে তিনি অন্যদের থেকে ব্যক্তিগত ক্যারিশমায় অনেক এগিয়ে। বিজেপির মধ্যেও তিনি এক অংশের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব।
এছাড়াও রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র ঠান্ডা যুদ্ধের কথা সকলেরই জানা। বর্তমান পরিস্থিতিতে বসুন্ধরাকে জমি ছাড়তে রাজি ছিলেন না অমিত শাহ। অলিখিত নির্দেশে রাজস্থান বিজেপি নেতাদের নিজেদের মত করে ঘর গোছাতেও বলেন তিনি।
বছর দুয়েক আগে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বিবাদ তুঙ্গে ওঠায় দলীয় কর্মসূচিতে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন বসুন্ধরা রাজে। উপনির্বাচনে দলের প্রচার, জনক্রোশ যাত্রা থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন তিনি। তবে, ইতিমধ্যেই দেব দর্শন ও ধর্মীয় সফরের মাধ্যমে পুনরায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন বসুন্ধরা।
- with inputs from IANS
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন