বিতর্কিত দক্ষিণ দিল্লির বিজেপি সাংসদ রমেশ বিধুরিকে নতুন দায়িত্ব দিল ভারতীয় জনতা পার্টি। আসন্ন রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে টঙ্ক জেলার নির্বাচনী প্রধানের দায়িত্ব দিল দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এই নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছে বিরোধীরা। মুসলিম ঘৃণার পুরষ্কার পেয়েছেন বিধুরি বলে কটাক্ষ করেছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহ সংসদ ভবনে বসেই বিএসপি সাংসদ দানিশ আলিকে ‘উগ্রবাদী, মোল্লা সন্ত্রাসবাদী’ বলে মন্তব্য করেছিলেন রমেশ বিধুরি। তাঁর এই মুসলিম বিরোধী হিংসাত্মক মন্তব্যে নিন্দার ঝড় উঠে দেশজুড়ে।
সম্প্রতি রাজস্থানের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে টঙ্ক জেলার নির্বাচনী প্রধানের দেওয়া হয়েছে বিধুরিকে। বিধুরি নিজেও টুইটারে (বর্তমানে X) জানিয়েছেন যে তিনি রাজস্থানের বিজেপি সভাপতি সিপি যোশীর নেতৃত্বে জয়পুরে অনুষ্ঠিত টঙ্ক জেলার সমন্বয় কমিটির বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। রাজস্থানের ওই জেলার ভোটব্যাঙ্ক রয়েছে গুর্জর সম্প্রদায়ের হাতে। জেলার চারটি বিধানসভা আসনের মধ্যে একটি আবার ওই সম্প্রদায়ের অন্তর্গত কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতা সচিন পাইলটের গড় হিসেবে পরিচিত। তবে সূত্রের খবর, বিধুরিও যেহেতু গুর্জর সম্প্রদায়েরই, সেক্ষেত্রে ওই জেলার ভোটব্যাঙ্ক গেরুয়া শিবিরমুখী করার জন্য বিধুরির উপরেই আস্থা রেখেছে বিজেপি।
তবে বিজেপির এই সিদ্ধান্তে বিরোধী ইন্ডিয়া শিবিরের নেতৃত্বের মধ্যে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। বিএসপি সাংসদ সম্পর্কে বিধুরির মন্তব্যের পরও কীভাবে তাঁকে নির্বাচনী প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিরোধীরা কাঠগড়ায় তুলছে বিজেপিকে। বিজেপির বিরুদ্ধে মুসলিম বিরোধী হিংসাকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ করে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র টুইটারে লিখেছেন, “শোকজ করার পরেও কীভাবে একজন নেতাকে নতুন দায়িত্ব দেয় বিজেপি? মোদী জি, এটাই কি আপনার সংখ্যালঘুদের জন্য স্নেহযাত্রা? এটাই কি আপনার ভালোবাসার প্রচার?” কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ জয়রাম রমেশও কটাক্ষ করে লিখেছেন, “সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস। এটাই হল ওদের বিশ্বাস।”
ঘটনার প্রতিবাদে মুখ খুলেছেন রাজ্যসভার বর্ষীয়ান নির্দলীয় সাংসদ তথা আইনজীবী কপিল সিব্বলও। জানিয়েছেন, “বিজেপি হিংসাকে পুরস্কার দেয়। সংসদের বিশেষ অধিবেশনে বিএসপি নেতা দানিশ আলিকে অকথ্য ভাষায় আক্রমণ করার জন্য বিধুরিকেও পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।” সিব্বল আরও জানিয়েছেন, “বিধুরিকে রাজস্থানের টঙ্ক জেলার নির্বাচনী প্রধানের দায়িত্ব দিয়েছে বিজেপি। টঙ্ক জেলায় মুসলিম জনসংখ্যা প্রায় ২৯.২৫ শতাংশ। এখন রাজনৈতিক লাভের জন্য বিজেপি হিংসাকে প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করবে।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন