লোকসভার আগে ‘ইন্ডিয়া’ ছেড়ে ‘এনডিএ’র হাত ধরছে আরএলডি নেতা জয়ন্ত চৌধুরী, এই জল্পনা বেশ কয়েকদিন ধরেই তৈরি হয়েছিল। আজ যেন সেই জল্পনা আরও জোরালো হল জয়ন্ত চৌধুরীর কথায়। শুক্রবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী মোদী ঘোষণা করেন এবছর ভারতরত্ন দেওয়া হবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা জয়ন্ত চৌধুরীর দাদু চৌধুরী চরণ সিংকে। আর তারপরেই সাংবাদিক বৈঠক করে বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ দিয়ে এনডিএতে যাওয়ার ইঙ্গিত দিলেন জয়ন্ত চৌধুরী।
তিনি এনডিএতে যোগ দিচ্ছেন কিনা এ সংক্রান্ত প্রশ্ন করা হলে, আরএলডি নেতাকে বলতে শোনা যায়, “আজ কোন মুখে আপনাদের প্রশ্নের জবাবে না বলব।“ জয়ন্তের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল, বিজেপির সঙ্গে আসন ভাগাভাগি হয়ে গেছে আরএলডি-র। আগামী ১২ তারিখ আনুষ্ঠানিকভাবে এনডিএতে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করবেন জয়ন্ত চৌধুরী। আর তার আগে জয়ন্তের এই দাবি সেই জল্পনাতে কার্যত শিলমোহর দিল।
রাজনৈতিক মহলের মতে, লোকসভা ভোটের আগে চৌধুরী চরণ সিংকে ভারতরত্ন দেওয়া ভোট ব্যাঙ্কে জাঠ ভোট বাড়ানোর একটা কৌশল। বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, দু’টি আসনে নিমরাজি হয়েছেন জয়ন্ত। তবে শেষ পর্যন্ত পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের জাঠ নেতাকে গোটা পাঁচেক আসন ছাড়া হতে পারে। তাহলে কি দাদুকে ভারতরত্ন দেওয়া এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর প্রলোভনে ইন্ডিয়া ছেড়ে এনডিতে যোগ দিচ্ছেন আরএলডি নেতা জয়ন্ত চৌধুরী?
জয়ন্ত চৌধুরীর বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনার পিছনে যে যে কারণ থাকতে পারে -
· আরএলডি প্রধান জয়ন্ত চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, তিনি ইতিমধ্যেই দলকে জানিয়েছেন বিজেপির সঙ্গে তার আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে। এবং খুব শীঘ্রই তিনি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করবেন এনডিএতে যোগ দেওয়ার খবরটি।
· পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ জাঠ নির্ভর এলাকা। ফলে যদি সেখানে আরএলডি ও এনডিএ জোট হয় তাহলে আসন সংখ্যা বাড়বে বিজেপির। বিজেপি ‘আপ কি বার ৪০০ পার’ লক্ষ্য পূরণ করতে সম্পন্ন হবে। পাশাপাশি, এর ফলে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে ভোট ব্যাঙ্কে।
· জয়ন্ত চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে খবর, সমাজবাদী পার্টির দেওয়া সাত আসনের থেকে এনডিএ-র হয়ে ৫টি আসনে লড়া নাকি আরএলডি-র জন্য বেশি লাভজনক। বিজেপি কাইরানা, বাঘপত, মথুরা এবং আমরোহা লোকসভা আসন ছাড়তে রাজি হয়েছে। আরও একটি আসন নিয়ে আলোচনা চলছে বলেই জানা গেছে।
· সূত্রের খবর, বিজেপির পক্ষ থেকে জয়ন্ত চৌধুরীকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, উত্তরপ্রদেশে আরএলডি-কে একটি মন্ত্রী পদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
· দলের এক প্রবীণ নেতা বলেছেন, কফিনে শেষ পেরেকটি ছিল যখন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব জাটদের মল্লিক সম্প্রদায়ের নেতা হরিন্দর মল্লিকের একটি ছবি টুইট করেছিলেন, আরএলডির সাথে জোট ঘোষণা করার ঠিক পরেই। বার্তাটি স্পষ্ট ছিল, জয়ন্ত চৌধুরীকে পরিকল্পনা করে তাঁর জায়গা দেখানো হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন