নির্বাচনের একদিন আগে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের চরম অস্বস্তিতে বিজেপি। মূলত জাঠ সম্প্রদায়ের নেতা তথা বিজেপি প্রার্থী সঞ্জীব বলিয়ান এবং রাজপুত নেতা সঙ্গীত সোমের বিবাদ চরমে উঠেছে। এই বিবাদের মূলে রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পুরুষোত্তম রূপালা।
কিছু দিন আগেই পুরুষোত্তম রূপালা রাজপুত সম্প্রদায়কে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ব্রিটিশরা আমাদের ওপর রাজ করেছে। অত্যাচার করেছে, শোষণ করেছে। মুঘলরাও অত্যাচার চালিয়েছে। কিন্তু রাজপুত রাজারা তাদের প্রণাম করতেন। এই বক্তব্যের পরই রাজপুতরা ওই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে। এমনকি সঙ্গীত সোম নিজে বিজেপি নেতা হওয়ার সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন পুরুষোত্তম রূপালাকে প্রার্থী থেকে না সরালে গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ সহ অন্যান্য হিন্দিভাষী রাজ্যগুলিতে প্রতিবাদ জানাবেন তারা। রূপালাকে রাজকোট থেকে প্রার্থী করেছে বিজেপি।
পশ্চিম উত্তরপ্রদেশে রাজপুত ভোট ব্যাঙ্ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মুজফফরনগর, নাগিনা, কইরানা, মিরাট, বাগপত, আগ্রা, মথুরা, ফতেপুর সিক্রির মতো কেন্দ্রগুলিতে গড়ে ১০ শতাংশের কাছাকাছি রাজপুত ভোট রয়েছে। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে যদি ভোট বিভক্ত হয়ে যায় তাহলে ক্ষতি হবে বিজেপিরই।
জাঠ নেতা জয়ন্ত চৌধুরীর আরএলডির সাথে জোট করে বিজেপি এবার নির্বাচনে লড়ছে। সে নিয়ে আগে থেকেই ক্ষোভ রয়েছে রাজপুত সম্প্রদায়ের মধ্যে। সেই ক্ষোভ আরও উসকে দিয়েছে রূপালার মন্তব্য। রাজপুত নেতা সঙ্গীত সোম সরাসরি প্রচারে নেমেছে জাঠ নেতা সঞ্জীব বলিয়ানের বিরুদ্ধে। সঙ্গীত বলেন, "‘উনি (সঞ্জীব বলিয়ান) এক জন জাতিবাদী নেতা। গত পাঁচ বছরে নিজের জাতের লোকেদের তুষ্ট করতে গিয়ে রাজপুতদের উপেক্ষা করেছেন।’’
এবার লোকসভা নির্বাচনে নিজের পুরনো কেন্দ্র মুজফফরনগর থেকেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সঞ্জীব বলিয়ান। তাঁর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন সমাজবাদী পার্টির হরেন্দ্র সিং মালিক। ২০১৪ এবং ২০১৯ পরপর দুটি লোকসভা নির্বাচনেই জয়ী হয়েছিলেন সঞ্জীব। তবে রাজপুত সংগঠন যদি তাঁর বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার করতে থাকেন তাহলে এই নির্বাচনে জয়ের জন্য তাঁকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হবে। ১৯ এপ্রিল অর্থাৎ প্রথম দফাতেই এই কেন্দ্রে নির্বাচন রয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন