তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপির আপত্তিকর বিজ্ঞাপন প্রকাশের মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞাই জারি থাকলো। সোমবার হাইকোর্টের আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে বিজেপির করা এই আবেদন শুনতে রাজি হয়নি সুপ্রিম কোর্ট। এর আগে কলকাতা হাইকোর্ট এই বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে বিজেপির করা আবেদনের ভিত্তিতে এদিন শীর্ষ আদালতে শুনানি চলাকালীন বিচারপতি জে কে মাহেশ্বরী এবং বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের ভ্যাকেশন বেঞ্চ জানায়, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে কোনও হস্তক্ষেপ করা হবে না।
বিজেপির পক্ষ থেকে এদিন শীর্ষ আদালতে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী পি এস পাতাওয়ালিয়া। তিনি বলেন, এই বিজ্ঞাপন তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে এবং হাইকোর্ট বিজ্ঞাপনের ওপর এই ধরণের ইনজাংশন দিতে পারে না। যদিও শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে রাজী হয়নি।
এর আগে গত সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানায়, অপরীক্ষিত তথ্যের ভিত্তিতে কোনও বিজ্ঞাপন দেওয়া হলে তাতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়। বেঞ্চ আরও জানায়, এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশন তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগের ভিত্তিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে।
এর আগে তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগের ভিত্তিতে বিজেপির দু’টি বিজ্ঞাপনের সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল আদালতের সিঙ্গেল বেঞ্চ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। গত বুধবার মামলার শুনানি হয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে।
শুনানি চলাকালীন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম জানান, সবকিছুরই একটা সীমাবদ্ধতা থাকা উচিত। আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে এমন কাজ করা উচিত নয়। যেমন বিমানবন্দরে গেলে প্রধানমন্ত্রীর ছবি এখন দেখা যাচ্ছে না। নির্বাচনের জন্য সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তেমনই বিজ্ঞাপনের জন্যও সীমাবদ্ধতা থাকা দরকার। ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশে কোনো হস্তক্ষেপ করবে না।
বিজেপির বিজ্ঞাপন প্রসঙ্গে আদালতে তৃণমূল জানিয়েছিল, বিজেপির একটি বিজ্ঞাপনে তৃণমূল কংগ্রেসকে 'দুর্নীতির মূল মানেই তৃণমূল' এবং অন্যটিতে 'সনাতন বিরোধী তৃণমূল' বলে প্রচার চালানো হচ্ছে। এইভাবে রাজ্য সরকারকে একটি নির্দিষ্ট ধর্মের বিরোধী হিসেবে কোনো রাজনৈতিক দল প্রচার চালাতে পারে না। বেআইনি কাজ করছে বিজেপি। রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে।
গত সপ্তাহের সোমবার ২০ মে সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ হওয়া বিজ্ঞাপন দিতে পারবে না বিজেপি। প্রতিটি দলেরই উচিত আদর্শ আচরণ বিধি মেনে চলা। প্রতিটি বিজ্ঞাপন দেওয়ার সময় সেটা যাচাই করে দেওয়া উচিত। ওই দুই বিজ্ঞাপনের প্রচারের ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে হাইকোর্ট।
- With inputs from IANS
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন