শুক্রবার বিজেপির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (NDA) জোটে যোগ দিয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ.ডি দেবগৌড়ার দল জেডি(এস)। কিন্তু তারপর থেকেই দলের অভ্যন্তরে শুরু হয়েছে ব্যাপক বিদ্রোহ। বিজেপির ছাতার তলায় আশ্রয় নেওয়ায় দলত্যাগ করেছেন দলের একাধিক মুসলিম নেতা। কর্ণাটকের প্রাক্তন মন্ত্রী এনএম নবি-সহ দলের একাধিক বর্ষীয়ান মুসলিম নেতাদের একাংশ ইতিমধ্যেই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে তাঁদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। বাকিরাও দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
শুক্রবার এইচ.ডি দেবগৌড়ার ছেলে তথা কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এইচ.ডি কুমারাস্বামী নয়াদিল্লিতে গিয়ে অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার দেখা করেন। এরপর অফিসিয়ালি জেডি(এস)-এর এনডিএ-তে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন নাড্ডা। সেই খবর কর্ণাটকে জেডি(এস)-এর মুসলিম নেতাদের কাছে পৌঁছলেই তাঁরা একজোটে দলত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। এনএম নবি ছাড়াও দলের বরিষ্ঠ সহ-সভাপতি সৈয়দ সফিউল্লা, নয়াদিল্লিতে কর্ণাটক সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি তথা জেডি(এস)-এর মুখপাত্র মোহিদ আলতাফ, দলের যুব শাখার সভাপতি এনএম নুর, সংখ্যালঘু শাখার প্রাক্তন প্রধান নাসির হুসেইন উস্তাদও তাঁদের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে সফিউল্লা জানিয়েছেন, “কুমারাস্বামীর নয়াদিল্লিতে গিয়ে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে দেখা করার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমি দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিই। দলের এই সিদ্ধান্তে মুসলিম নেতারা একেবারেই খুশি নয়। কারণ, জেডি(এস) একটা ধর্মনিরপেক্ষ দল হয়েও বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট শিবিরে যোগ দিয়েছেন। কর্ণাটকে ক্ষমতায় থাকাকালীন বিজেপি রাজ্যে একাধিক সাম্প্রদায়িক সমস্যা তৈরি করেছে।” তিনি আরও জানিয়েছেন, “দলের এই সিদ্ধান্তে শুধুমাত্র মুসলিম নেতারাই নন, বেশ কিছু ধর্মনিরপেক্ষ হিন্দুরাও অখুশি।”
রাজনৈতিক মহলের মতে, জেডি(এস)-এর এই সিদ্ধান্ত দলের ভবিষ্যৎকে আরও অন্ধকারে ঠেলে দিল। কারণ, কর্ণাটকের মুসলিম ভোট ব্যাঙ্কের অনেকটাই বরাবরই জেডি(এস)-এর দখলে ছিল। তবে ২০২৩ সালের নির্বাচনে অবশ্য কংগ্রেস জেডি(এস)কে বিজেপির ‘বি টিম’ বলে প্রচার করলে মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক তাঁদের থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। একটি সূত্রের খবর, দলত্যাগী মুসলিম নেতারা কংগ্রেসে যোগ দিতে পারেন। কিন্তু সফিউল্লা সাফ জানিয়েছেন, “সমাজের সেবা করা জন্য আমাদের কোনো নির্দিষ্ট দলের প্রয়োজন নেই। যেখানে আমরা মানুষের হয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাধীনতা পাবো, আমরা সেখানেই যাবো।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন