ত্রিপুরায় সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলের প্রাক-নির্বাচনী হিংসা এবং ভয় দেখানোর অভিযোগের মাঝেই, ক্ষমতাসীন বিজেপি আগরতলা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (এএমসি) এবং অন্যান্য ১৯টি শহুরে পুর ওয়ার্ডের ৩৩৪টি আসনের মধ্যে ১১২টি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে। আগামী ২৫ নভেম্বর এই আসনগুলোতে নির্বাচন হবার কথা।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের (এসইসি) পক্ষ থেকে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে বিজেপি ইতিমধ্যেই পশ্চিম ত্রিপুরার জিরানিয়া, রানির বাজার, মোহনপুর, বিশালগড়ের সাতটি নাগরিক সংস্থায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। দক্ষিণ ত্রিপুরার শান্তির বাজার ও উদয়পুর এবং উত্তর ত্রিপুরার কমলপুরেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বিজেপি।
নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এখন বিজেপি, সিপিআই-এম নেতৃত্বাধীন বাম দল, তৃণমূল কংগ্রেস এবং কংগ্রেস সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৭৮৫ জন প্রার্থী ২২২টি আসনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতার ময়দানে আছেন। এএমসি সহ ত্রিপুরার ২০টি শহুরে স্থানীয় সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন আগামী ২৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ভোট গণনা আগামী ২৮ নভেম্বর।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মানিক লাল দে জানান, কোভিড প্রোটোকল মেনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এর মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এএমসি এবং অন্যান্য নাগরিক সংস্থাগুলির পাঁচ বছরের মেয়াদ গত বছরের ২০ ডিসেম্বর শেষ হয়। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্বাধীন ত্রিপুরা সরকার কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে নির্বাচন পরিচালনা করেনি। যা রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের তৈরি করে।
বিরোধী দলগুলির পক্ষে সিপিআই-এম নেতৃত্বাধীন বাম দল, তৃণমূল কংগ্রেস এবং কংগ্রেস – আলাদা আলাদাভাবে অভিযোগ জানিয়েছে যে, ক্ষমতাসীন বিজেপি নেতৃত্ব এবং তাদের গুন্ডাদের সহিংস আচরণ, হুমকি এবং চাপের কারণে তাদের অনেক প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি বা জমা দেওয়ার পর প্রার্থিপদ প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন।
সিপিআই-এম রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্র চৌধুরী এবং তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সুবল ভৌমিক পৃথকভাবে অভিযোগ করেছেন যে তাদের অনেক প্রার্থীর বাড়িতে বিজেপি কর্মীরা এবং তাদের গুন্ডাদের দ্বারা আক্রমণ করা হয়েছে এবং তাদের অনেককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।
বিরোধী দলগুলোও সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নাগরিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে কমিশনের কাছে আহ্বান জানিয়েছে। যদিও সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছে বিজেপি। ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য জানান, তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের রাজত্ব জারি করেছে এবং ত্রিপুরায় হিংসার সংস্কৃতি নিয়ে এসেছে।
ভট্টাচার্য মিডিয়াকে বলেন, "টিএমসি নেতারা প্রায়শই ত্রিপুরায় আসছেন এবং তারা বিভিন্ন চিট ফান্ড থেকে উপার্জন করা লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে এবং রাজ্যে (ত্রিপুরা) হিংসা উসকে দিচ্ছেন।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন