ফের ফাটল গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। নির্বাচনের মুখেই বুধবার পদত্যাগ করলেন বিজেপি বিধায়ক দিবা চন্দ্র হ্রাংখাওল। ত্রিপুরার বিজেপি নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন জোটের অষ্টম বিধায়ক, যিনি পদত্যাগ করলেন। সাংবাদিকদের সামনে তিনি জানান, ব্যক্তিগত কারণে তিনি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। গত দুই বছরে জোটের যে আটজন বিধায়ক পদত্যাগ করেছেন, তাদের মধ্যে পাঁচজনই বিজেপির।
৬৭ বছর বয়সী হ্রাংখাওল ত্রিপুরার ধলাই জেলার করমচেরা আসন থেকে চারবার জয়ী হয়েছেন। ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তিনি বিজেপিতে যোগদান করেন। তারও আগে তিনি তিনবার নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন। ২০১৬ সালে তিনি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ঠিক একবছর পর অর্থাৎ ২০১৭ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন হ্রাংখাওল।
এদিন পদত্যাগ পত্র জমা দেওয়ার সময় হ্রাংখাওলের সাথে ছিলেন প্রবীণ কংগ্রেস নেতা এবং প্রাক্তন বিধায়ক আশীষ সাহা, যুব কংগ্রেসের নেতা বাপ্টু চক্রবর্তী এবং ত্রিপুরার কংগ্রেস মুখপাত্র প্রশান্ত ভট্টাচার্য। বিজেপি ছেড়ে পুনরায় কংগ্রেসে যোগদান করছেন কিনা জানতে চাইলে হ্রাংখাওল জানান, “আমি যখন সিদ্ধান্ত নেব তখন আপনারা জানতেই পারবেন। কিন্তু সেটা আজকের জন্য নয়।”
তিনি আরও বলেন, বুধবার পদত্যাগ পত্র জমা দেওয়ার সময় যেসকল কংগ্রেস নেতারা উপস্থিত ছিলেন, তাঁরা সকলেই 'ভাল বন্ধু'। এমনকি, বিজেপি এবং সিপিআই(এম) এর লোকদের সাথেও তাঁর একই রকম সম্পর্ক ছিল। পদত্যাগী বিধায়কের কথায়, "তাঁরা আজকে আমার সাথে আসতে পারেনি, তবে আমরা সবসময় বিভিন্ন ব্যাপারে তাঁদের সাথে আলোচনা করি।"
তবে, নির্বাচনের দোড়গোড়ায় বিজেপি থেকে একের পর এক বিধায়কের পদত্যাগের ঘটনায় যথেষ্ট অস্বস্তিতে রয়েছে পদ্ম শিবির। একমাস আগেই পদত্যাগ করেছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মন্ত্রী মেভার কুমার জামাতিয়া। তিনি বিজেপির জোট সঙ্গী ইন্ডিজেনাস পিপলস ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরা (আইপিএফটি)-র সদস্য ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি-আইপিএফটি সরকারের বিভিন্ন ব্যর্থতার কারণে তিনি পদত্যাগ করেন।
তবে, এদিন বিজেপি-আইপিএফটি সরকারের কাজকর্ম সম্পর্কে কথা বলতে অস্বীকার করেছেন হ্রাংখাওল। তাঁর দাবি, "আমি তাদের আদর্শের বিষয়ে আজকে অন্তত আর চিন্তাভাবনা করব না।" তবে তাঁর পদত্যাগের ব্যাপারে ত্রিপুরা বিজেপির মুখপাত্র সুব্রত চক্রবর্তীর প্রতিক্রিয়া, "হাংখ্রাওল দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থ, সেই কারণে পদত্যাগ করতেই পারেন। বিজেপি কোনও ব্যক্তির উপর নির্ভরশীল নয়। তাই তাঁর পদত্যাগ আমাদের দলকে প্রভাবিত করবে না।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন