ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনের সম্পূর্ণ ফল ঘোষিত। ক্ষমতায় ফিরলেও অস্বস্তিতে ত্রিপুরার বিজেপি শিবির। গত বারের তুলনায় অনেক কমেছে আসন সংখ্যা। কমেছে ভোট শতাংশের হারও। ত্রিমুখী লড়াইয়ে কোনওমতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে বিজেপি-আইপিএফটি জোট। যদিও ভোটের আগে বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা দাবি করেছিলেন, ত্রিপুরায় বিরোধীশূন্য বিধানসভা হবে। গতবারের থেকে আসন সংখ্যা বাড়বে। আসনের ‘সুনামি’ বইবে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ৬০ সদস্যের ত্রিপুরা বিধানসভায় বিজেপি এ বার ৩২টি আসনে জিতেছে। প্রার্থী দিয়েছিল ৫৫ টি আসনে। প্রাপ্ত ভোটের হার ৩৮.৯৭ শতাংশ। সহযোগী আইপিএফটি ৬টি লড়ে মাত্র ১টিতে জিতেছে। তাদের প্রাপ্ত ভোট মাত্র ১.২ শতাংশ। ২০১৮ সালে ৫১ টি আসনে লড়ে ৩৫ টি আসনে জিতেছিল বিজেপি। প্রাপ্ত ভোটের হার ছিল ৪৩.৫৯ শতাংশ। আইপিএফটি ৯টিতে প্রার্থী দিয়ে ৮টিতেই জেতে। ভোট পেয়েছিল প্রায় ৭.৪ শতাংশ। অর্থাৎ ২০১৮ সালের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ ভোট কমেছে বিজেপি জোটের।
এবারের নির্বাচনে বাম এবং কংগ্রেস জোট বেঁধে লড়াই করেছিল। মোট ১৪ টি আসনে জিতেছে এই জোট। ৪৪ টি আসনে লড়ে সিপিআইএমের দখলে গিয়েছে ১১ টি আসন এবং ১৩ টি আসনে প্রার্থী দিয়ে কংগ্রেস জিতেছে ৩ টি আসনে। ১ টি করে আসনে লড়েছে সিপিআই, আরএসপি এবং ফরওয়ার্ড ব্লক। সিপিআইএমের প্রাপ্ত ভোটের হার ২৪.৬২ শতাংশ এবং কংগ্রেস পেয়েছে ৮.৫৬ শতাংশ ভোট। সিপিআই, আরএসপি এবং ফরওয়ার্ড ব্লক ভোট পেয়েছে যথাক্রমে – ০.৪৮%, ০.৬৭% এবং ১.০৩%।
ত্রিপুরায় এবার ২৮ টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল তৃণমূল। প্রচারে ঝাঁপিয়ে নেমেছিলেন মমতা ব্যানার্জি,অভিষেক ব্যানার্জি সহ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু একটিও আসনে জিততে পারেনি বাংলার শাসকদল। এমনকি তাদের প্রাপ্ত ভোটের হার ১ শতাংশেরও কম। ০.৮৮ শতাংশ ভোট পেয়েছে মমতা ব্যানার্জির দল। যেখানে নোটাতে ভোট পড়েছে ১.৩৬ শতাংশ।
প্রথমবার নির্বাচনে নেমে ভাল ফল করেছে ত্রিপুরা রাজপরিবারের বংশধর প্রদ্যোত বিক্রম মাণিক্য দেববর্মনের গড়া নয়া জনজাতি দল তিপ্রা মথা বা টিএমপি। ৪২ টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ১৩টিতে জয়ী হয়েছে তারা। জনজাতি এলাকার ২০টি আসনের পাশাপাশি বাঙালি অধ্যুষিত ২২টি কেন্দ্রেও প্রার্থী দিয়েছিল টিএমপি। সেখানেও নজর কাড়া ভোট পেয়েছে তারা। এই সবকটি আসনে ধাক্কা খেয়েছে বাম কংগ্রেস জোট। এমনকি সিপিআইএমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের কেন্দ্র ধনপুরেও জয়ী হয়েছে বিজেপি।
ফলাফল সম্পর্কে অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির (AICC) ত্রিপুরার ইনচার্জ অজয় কুমার সংবাদমাধ্যমে বলেন, "বিরোধী ভোটকে একত্রিত করার প্রচেষ্টায় পুরোপুরি সফল হতে পারিনি আমরা। বিরোধীদের ভোট বাম-কংগ্রেস জোট এবং তিপ্রা মথার মধ্যে ভাগ হয়ে গেছে। তবে বিজেপির ভোট কমেছে, ৪৩.৫৯ শতাংশ থেকে ৩৯ শতাংশে নেমে এসেছে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন