ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে ২৮.১৪ লক্ষ ভোটারের মধ্যে ৮১ শতাংশেরও বেশি ভোটার বিকাল ৪ টা পর্যন্ত তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। রাজ্যের নির্বাচনী আধিকারিকরা জানিয়েছেন, কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। যদিও বেশ কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার খবর পাওয়া গেছে।
২০১৩ এবং ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনে ভোটারদের ভোটদানের হার ছিল যথাক্রমে ৯১.৮২ শতাংশ এবং ৮৯.৩৮ শতাংশ৷
এক নির্বাচনী আধিকারিক আইএএনএস-কে জানিয়েছেন, "বিকাল ৪ টেয় আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট শেষ হওয়ার পরেও রাজ্য জুড়ে অনেক ভোটকেন্দ্রে এক লাখেরও বেশি ভোটার এখনও ভোট দেবার অপেক্ষা করছেন। চূড়ান্ত ভোটের শতাংশ ৮৬ শতাংশ অতিক্রম করতে পারে।"
বিভিন্ন জেলা থেকে রাজনৈতিক কর্মীদের ওপর হামলা, ভয়ভীতি ও ভোটারদের বাধা দেওয়ার অনেক ঘটনা ঘটেছে।
গোমতি, সিপাহিজোলা, দক্ষিণ ত্রিপুরা এবং পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরা বিরোধীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন বলে বিরোধীদের অভিযোগ। কমপক্ষে ৬০ জন বিরোধী দলের কর্মী বিভিন্ন ঘটনায় আহত হয়েছেন।
প্রধান বিরোধী দল সিপিআই-এম অভিযোগ করেছে যে বিজেপি কর্মীরা চারটি জেলার ২৫টিরও বেশি ভোটকেন্দ্র থেকে তাদের প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টদের বের করে দিয়েছে।
ত্রিপুরার মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (সিইও) গিত্তে কিরণকুমার দিনকাররাও জানিয়েছেন, যেখানেই কর্তৃপক্ষ সমস্যার কোনও তথ্য পেয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনীকে সমস্যাগুলি সমাধানের জন্য অবিলম্বে সেই এলাকায় পাঠানো হয়েছে।
একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গোমতি জেলায় ক্ষমতাসীন বিজেপির পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটারদের আহ্বান জানানোর অভিযোগে একজন কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
সিপিআই-এম এবং কংগ্রেস সহ বিরোধী দলগুলি অভিযোগ করেছে যে শান্তিরবাজার, হৃষমুখ, ধনপুর এবং কাকরাবন সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় শাসক দলের কর্মীরা বিরোধী দলের ভোটারদের বাধা দেয়।
এর আগে, আটটি জেলায় সকাল ৭টায় ভোট শুরু হওয়ার আগেই ভোটকেন্দ্রের সামনে সারিবদ্ধ হয়েছিলেন পুরুষ, মহিলা ও প্রথমবারের মতো ভোটাররা।
রেয়াং আদিবাসী, যারা জাতিগত সমস্যার কারণে মিজোরাম থেকে ২৬ বছর আগে বাস্তুচ্যুত হয়েছিল, এবং ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের জিরো লাইনে (বেড়ার বাইরে) বসবাসকারী ভোটাররাও তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
সিইও জানিয়েছেন, ৩১ জন মহিলা সহ মোট ২৫৯ জন প্রার্থী ৬০-সদস্যের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রার্থী (৫৫) শাসক বিজেপির। সিপিআই-এম-এর ৪৩ জন, টিপরা মোথা পার্টির ৪২ জন, তৃণমূল কংগ্রেস-এর ২৮ জন এবং কংগ্রেসের ১৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মোট ৫৮ জন নির্দল প্রার্থী এবং বিভিন্ন ছোট দল থেকে ১৪ জন মনোনীত প্রার্থীও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
নির্বাচন পরিচালনার জন্য ৩,৩২৭ টি ভোট কেন্দ্রে প্রায় ৩১,০০০ জন কর্মী মোতায়েন করা হয়।
বৃহস্পতিবারের ভোটে ১৩.৯৯ লক্ষ মহিলা সহ মোট ২৮.১৪ লক্ষ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার যোগ্য ছিলেন।
একজন সিনিয়র পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর (সিএপিএফ) ৪০০টি কোম্পানি (৩০,০০০ নিরাপত্তা কর্মী) ছাড়াও প্রায় ৯,০০০ ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস জওয়ান এবং ৬,০০০ ত্রিপুরা পুলিশ বাহিনীর কর্মীকে সুষ্ঠু ও হিংসতামুক্ত নির্বাচনের জন্য মোতায়েন করা হয়েছিল। .
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন