মণিপুরের হাপ্তা কাংজেইবুং প্যালেস গ্রাউন্ড থেকে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর প্রস্তাবিত ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা শুরুর অনুমতি দিলেন না রাজ্যের বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। আগামী ১৪ জানুয়ারি ইম্ফলের এই মাঠ থেকেই কংগ্রেসের ডাকে পদযাত্রা শুরুর কথা ছিল।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং-এর সঙ্গে এক বৈঠকের পর রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি কেইশাম মেঘাচন্দ্র সাংবাদিকদের জানান, ওই মাঠের পরিবর্তে মিছিল শুরুর জন্য তিনটি বিকল্প জায়গার কথা ভাবা হচ্ছে।
এদিন সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “বিজেপি সরকার এক অরাজনৈতিক পদযাত্রার জন্য ওই মাঠ ব্যবহার করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা দুর্ভাগ্যজনক এবং অগণতান্ত্রিক। ওই মাঠের পরিবর্তে বিকল্প তিনটি জায়গার কথা ভাবা হচ্ছে, যেখান থেকে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা শুরু হবে।
মণিপুর সরকারের সিদ্ধান্তকে গণতন্ত্রের হত্যা এবং মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়া বলে জানিয়ে কংগ্রেস সভাপতি বলেন এআইসিসি নির্ধারিত সূচী অনুসারেই ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা শুরু হবে।
তিনি আরও বলেন, ১৪ জানুয়ারি ওই যাত্রার সূচনা পর্বে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও সাংসদ এবং কংগ্রেস নেতৃত্ব ইম্ফলে উপস্থিত থাকবেন।
এর আগে গত সোমবার কেইশাম মেঘাচন্দ্রের নেতৃত্বে কংগ্রেসের এক প্রতিনিধিদল মণিপুরের মুখ্যসচিবের সঙ্গে দেখা করে হাপ্তা কাংজেইবুং প্যালেস গ্রাউন্ড থেকে মিছিল শুরুর অনুমতি চান। কেইশাম জানিয়েছেন, মুখ্যসচিব জানিয়েছিলেন সোমবার সন্ধ্যের মধ্যেই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। কংগ্রেস সভাপতি জানান, ২ জানুয়ারি এই অনুমতি চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছিল।
মণিপুরের প্রধানমন্ত্রী এন বীরেন সিং এর আগে জানিয়েছিলেন, রাজ্য সরকার এই বিষয়ে ভেবে দেখছে এবং নিরাপত্তা বিষয়ক বিভিন্ন বিষয় দেখার পর যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে তা কংগ্রেস নেতৃত্বকে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এই যাত্রা সম্পর্কে এআইসিসি-র সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল জানিয়েছেন, মণিপুর থেকে শুরু করে এই যাত্রা নাগাল্যান্ড, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ এবং মেঘালয় হয়ে ২০ মার্চ মহারাষ্ট্রের মুম্বাইতে পৌঁছাবে। দীর্ঘ এই যাত্রাপত্রে ১৫ টি রাজ্যের ৬,৫০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করবে ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা।
প্রসঙ্গত, গত ৮ মাসের বেশি সময় ধরে জাতিগত দাঙ্গায় বিধ্বস্ত মণিপুর। মূলত অ-আদিবাসী জনগোষ্ঠী মেইতেই এবং আদিবাসী কুকি-জো জনগোষ্ঠীর মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘাতে কমপক্ষে ২০০ মানুষ নিহত হয়েছেন এবং আহতের সংখ্যা প্রায় ১,৫০০। এই জাতিদাঙ্গায় দুই গোষ্ঠীর প্রায় ৭০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন