বিজেপি আবারও রাম মন্দির নির্মাণ এবং ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগানকে পাঁচ রাজ্যে, বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে প্রধান ইস্যুতে পরিণত করতে চলেছে। আক্রমণের মূল লক্ষ্য এখন প্রধান বিরোধী সমাজবাদী পার্টির (এসপি) প্রধান অখিলেশ যাদব এবং তাঁর দল।
বিজেপির এক বিশিষ্ট নেতা আইএএনএস-কে জানিয়েছেন – “আমাদের কাছে ভগবান শ্রী রাম এবং অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণ কখনই নির্বাচনী এজেন্ডা ছিল না। এই ইস্যুতে আমাদেরকে যদি ভারতীয় রাজনীতিতে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করা হয়, তাহলে আমাদের কৃতিত্বকে জনসাধারণের কাছে তুলে ধরার প্রয়োজন আছে অবশ্যই।”
উত্তরপ্রদেশের অন্য এক মন্ত্রী আইএএনএস-কে বলেন, “আমাদের অবশ্যই জনগণকে এটা বলতে হবে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমলে এবং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের শাসনাকালেই রামমন্দির নির্মাণের ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এছাড়াও আমরা এই বছর ‘দীপোৎসব’-এর মাধ্যমে রেকর্ডও গড়েছি। ১৯৯০ সালে কী হয়েছিল এবং বিরোধীরা আবার ক্ষমতায় এলে কী হতে পারে সে সম্পর্কেও জনগণকে অবগত করা দরকার।”
সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদি ও যোগী আদিত্যনাথের রাজনৈতিক বক্তব্যে একপ্রকার স্পষ্ট উত্তপ্রদেশ নির্বাচনে ‘ধর্মীয় মেরুকরণ’ ‘রাম মন্দির’ই বিজেপির প্রধান অস্ত্র হতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত ৫ নভেম্বর কেদারনাথ সফরে জনগণের উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার সময় অযোধ্যার কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছেন, “মাত্র দু'দিন আগে, সারা বিশ্ব অযোধ্যায় ‘দীপোৎসব’ উদযাপনের সাক্ষী ছিল। আপনি কি ভাবতে পারেছেন আমাদের প্রাচীন সাংস্কৃতিক রূপ কতটা সুন্দর?”
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, ৩ নভেম্বর, অযোধ্যায় আয়োজিত দীপোৎসবের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করার সময় বলেন যে, অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ কেউ আটকাতে পারবে না এবং এটি ২০২৩ সালের মধ্যে ভক্তদের জন্য প্রস্তুত হবে। তাঁর কথায়, “৩১ বছর আগে অযোধ্যায় কী ঘটছিল? রামভক্তদের বর্বরভাবে গুলি করা হয়েছিল। লাঠিচার্জও হয়েছিল। জয় শ্রী রাম স্লোগানকে তখন অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হত।”
অখিলেশ যাদবের পরিবারকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন- “যারা ৩১ বছর আগে রাম ভক্তদের উপর গুলি চালাচ্ছিল, তারা এখন আপনার সামনে মাথা নত করছে। আপনারা যদি আমাদের এজেন্ডাকে এইভাবে সমর্থন করতে থাকেন, তবে যাদব পরিবার শীঘ্রই আপনাকে খুশি করার জন্য করসেবক হয়ে উঠবে।”
সমাজবাদী পার্টির সমালোচনা করে যোগী বলেন, “অখিলেশ যাদব সরকার রাজ্যে শুধুমাত্র কবরস্থানে টাকা খরচ করেছে। কিন্তু বিজেপি সরকার রাজ্যের রাম জন্মভূমি, কাশী বিশ্বনাথ এবং নৈমিষারণ্য তীর্থ সহ ৫০০টি তীর্থস্থানে টাকা খরচ করছে। এর মধ্যে ৩০০টি কাজ হয়েছে। আরও ২০০ টির কাজ চলছে।”
উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, মেরুকরণের ঝাঁঝ ক্রমশই বাড়াচ্ছে বিজেপি। যোগী আদিত্যনাথ কিংবা নরেন্দ্র মোদির বিভিন্ন বক্তব্যেই তা স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
- With IANS Inputs
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন