Language: বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দিল কেন্দ্র, বিধানসভা ভোটের জন্যই কি এই পদক্ষেপ?

People's Reporter: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, “আমাদের দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে ভারত সরকার একটি ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দিয়েছে।“
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীফাইল ছবি
Published on

বাংলা ভাষাকে ‘ধ্রুপদী ভাষা’র মর্যাদা দিল কেন্দ্র সরকার। এর আগে ভারতে ছ’টি ভাষা এই তালিকায় ছিল। এবার সেই তালিকায় বাংলা-সহ যুক্ত হল আরও পাঁচটি ভাষা। এবার থেকে ভারতে ধ্রুপদী ভাষা এগারোটি। এই নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরে এই স্বীকৃতি আদায়ের চেষ্টা করছেন উনি। অন্যদিকে, শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, বাঙালিকে পুরস্কার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যদিও রাজনৈতিক মহলের মন্তব্য, ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের দিকে তাকিয়েই এই সিদ্ধান্ত মোদী সরকারের।

বাংলা ভাষাকে ধ্রুপদী ভাষার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার খবর আসার পর শুক্রবার রাতেই এক্স হ্যান্ডেলে পোষ্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে তিনি লেখেন, “আমাদের দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে ভারত সরকার একটি ধ্রুপদী ভাষার মর্যাদা দিয়েছে।“ তিনি জানান, এই সংক্রান্ত গবেষণার তিনটি খন্ড পাঠানো হয় কেন্দ্রের কাছে। মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “অনেকদিন ধরে আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে এই সংক্রান্ত গবেষণালব্ধ বিপুল তথ্য জমা দিয়ে দাবি করছিলাম যাতে বাংলা ভাষাকে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়।“

অন্যদিকে, শুভেন্দু অধিকারীর জানিয়েছেন, দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে আপামর বাঙালির জন্য এটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উপহার। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “এই স্বীকৃতির ফলে বাংলা ভাষা নিয়ে গবেষণা এবং সাহিত্য চর্চার জন্য বিশেষ অনুদান দেবে কেন্দ্রীয় সরকার, এর ফলে প্রাচীন পাণ্ডুলিপি, শিলালিপি ও দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থসমূহ সংরক্ষণের জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হবে।“ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের মতে, বাঙালিদের জন্য এটা ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’। 

যদিও রাজনৈতিক মহলের মত, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে মোদী সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছে। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ৪২ টি আসনের মধ্যে মাত্র ১২ টি আসন পেয়েছে। এর আগে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মাত্র ৭৭ টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। ২০২৬ –এ বিধানসভা নির্বাচন। সেই কথা মাথায় রেখেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে মোদী সরকার।

উল্লেখ্য, কোনও ভাষার ইতিহাস বা নথির বয়স যদি ১৫০০ থেকে ২০০০ বছর বা তারও বেশী পুরানো হয়, যাদের একটি বৃহৎ ও অত্যন্ত সমৃদ্ধ প্রাচীন সাহিত্য আছে এবং যাদের প্রাচীন সাহিত্যের ঐতিহ্যটি অপর কোনো সাহিত্যিক ঐতিহ্যের পরম্পরায় নয়, বরং স্বাধীন ও স্বাবলম্বীভাবে গড়ে উঠেছিল, তাদের ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এর আগে এই স্বীকৃতি পেয়েছিল তামিল, সংস্কৃত, তেলুগু, কন্নড়, মালয়ালম, ওড়িয়া। এবার সেই তালিকায় জুড়ল বাংলা, মরাঠি, পালি, অহমিয়া এবং প্রাকৃত। 

এই ভাষায় স্বীকৃতি পেলে গবেষণা এবং সাহিত্য চর্চায় বিশেষ অনুদান দেয় কেন্দ্র। এছাড়া এই ভাষায় লেখা প্রাচীন পাণ্ডুলিপি, শিলালিপি, এবং দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থসমূহ সংরক্ষণের জন্য বিশেষ উদ্যোগী হওয়া হয়। দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই স্বীকৃতি প্রাপ্ত ভাষাকে পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ বৃদ্ধি পায়। এছাড়া আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয়।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in