১১ বছর আগে জিআই ট্যাগ মিললেও শংসাপত্র মেলেনি। ২০২২-এর শেষে ১৭ জন বালুচরী শিল্পীর হাতে সেই শংসাপত্র তুলে দিল প্রশাসন। শিল্পীদের মতে এতে বালুচরী শিল্পের আরও উন্নতি ঘটবে। এই জিআই বা জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন মূলত নির্ভর করে পণ্যটির প্রাচীনত্ব ও অভিনবত্বের ওপর।
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বালুচরী শাড়ির কথা সকলেই জানেন। তাঁত বুনে এই শাড়ি তৈরি করা হয়। বিষ্ণুপুরের এটিই প্রধান কুটির শিল্প। বলা যেতে পারে বিষ্ণুপুরের প্রতিটি ঘরেই তাঁতি খুঁজে পাওয়া যাবে। দীর্ঘ ১১ বছর লড়াইয়ের পর সেই সম্মান তাঁরা লাভ করলেন। প্রশাসনের তরফ থেকে মোট ১৭ জন বালুচরী শিল্পীকে গ্লোবাল ইন্ডিকেশন শংসাপত্র দেওয়া হল। জানা যাচ্ছে, শুধু এই ১৭ জনই নয়, ভবিষ্যতে বালুচরী শিল্পের সাথে যুক্ত সমস্ত শিল্পীকেই শংসাপত্র প্রদান করা হবে।
শংসাপত্র পেয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত শিল্পীরা। তাঁরা জানান, 'এই সম্মান প্রদানের জন্য প্রশাসনকে অনেক ধন্যবাদ। আমরা যে এত কষ্ট করে তাঁত বুনি, শাড়ির মধ্যে বিভিন্ন নকশা তুলে ধরি তারই সাফল্য এটা।' বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসক জানান, খুব তাড়াতাড়ি একটি শিবিরের আয়োজন করা হবে। সমস্ত তাঁতীদের বলা হচ্ছে, তাঁরা এই শংসাপত্র পাওয়ার জন্য আবেদন করুন। আমরাও চেষ্টা করব যাতে, তাঁতিরা এই স্বীকৃতি পান।'
বিষ্ণুপুরের বালুচরি শিল্প বিখ্যাত হলেও ইতিহাস কিন্তু অন্য কথা বলছে। এই বালুচরী শাড়ির প্রথম আবির্ভাব হয় মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে। মুর্শিদাবাদের বালুচর গ্রামের তাঁত শিল্প ছিল এটি। নবাবী আমল শেষ হওয়ার সাথে সাথেই বালুচরী শিল্পের বিলুপ্তি ঘটতে থাকে। তাঁতিরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকেন। ফলে তারা সেই শিল্প থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। পরবর্তীকালে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর এই বালুচরী শিল্পের জন্য জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন