৪০০ বছরের ইতিহাস বদলানো যায় না, তাজমহল প্রসঙ্গে মামলাকারীকে শীর্ষ আদালতের ভর্ৎসনা

বিচারপতিরা বলেন, ‘সব কিছুতে আদালতকে টানবেন না। তাজমহলের কত বয়স, তা কি আমরা বলতে পারি! ইতিহাসকে চলতে দিন। রিট পিটিশনটি খারিজ করা হচ্ছে।’
তাজমহল
তাজমহলফাইল ছবি, নিজস্ব চিত্র
Published on

ইতিহাস পাঠ্যপুস্তক থেকে তাজমহল সম্পর্কে ‘ভুল তথ্য’ সরানোর দাবি তুলে সুপ্রিম কোর্ট মামলার আবেদন জানিয়েছিলেন সুরজিত সিং যাদব নামে এক ব্যক্তি। সোমবার, সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত।

বিচারপতি এম আর শাহ ও বিচারপতি সি টি রবিকুমারের বেঞ্চ জানায়, ‘আমরা এখানে ইতিহাসের পাতা খুলতে আসিনি। ইতিহাসকে চলতে দিন। রিট পিটিশনটি খারিজ করা হচ্ছে।’

এদিন বেঞ্চ জানায়, তাজমহলের প্রকৃত বয়স ও প্রকৃত ইতিহাস নির্ধারণের কাজ তাদের নয়। স্মৃতিসৌধের ঐতিহাসিক সত্য উদ্ধারের বিষয়টিও আদালতের হাতে নয়।

বিচারপতিরা বলেন, ‘সব কিছুতে আদালতকে টানবেন না। তাজমহলের কত বয়স, তা কি আমরা বলতে পারি! না ঠিক করতে পারি! ৪০০ বছর পর এর নেপথ্য ইতিহাস কী তা আদালত বলবে কীভাবে?’

তাজমহল নির্মাণ নিয়ে ইতিহাসের বই এবং পাঠ্যপুস্তকে যে 'কথিত ভুল ঐতিহাসিক তথ্য' আছে, তা সরিয়ে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন সুরজিত সিং যাদব।

মামলার আবেদনে তিনি জনান, 'শাহজাহানের দরবারের সমস্ত ইতিহাসবিদরা কেন এই মহৎ সমাধিসৌধের স্থপতির নাম উল্লেখ করেননি তা অত্যন্ত অদ্ভুত।'

তিনি দাবি করেন, 'এটি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করে যে রাজা মান সিংয়ের প্রাসাদটি ভেঙে ফেলা হয়নি। তবে, তাজমহলের বর্তমান চেহারা তৈরি করার জন্য শুধুমাত্র সংশোধন ও সংস্কার করা হয়েছিল।'

আবেদনকারীর আইনজীবী আদালতে জানান, 'আবেদনের মূল উদ্দেশ্য হল, সপ্তদশ শতাব্দীর এই স্মৃতিসৌধ সম্পর্কে সঠিক তথ্য স্কুলপড়ুয়াদের জানানো।'

শাহজাহানের তৈরি তাজমহলের আগেও সেখানে কি সৌধ ছিল? এর জবাবে বেঞ্চ জানায়, 'সত্যি কী এ ব্যাপারে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে! আমরা সিদ্ধান্ত নেব, এটাই কি আদালতের কাজ!'

এরপর আইনজীবী জনস্বার্থ আবেদন তুলে নিয়ে জানান, তাঁরা এ বিষয়ে ভারতের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণে যাবেন।

প্রসঙ্গত, গত অক্টোবরে, তাজমহলের 'প্রকৃত ইতিহাস অধ্যয়ন' এবং এই সংক্রান্ত বিতর্কের অবসান দাবিতে, একটি ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির গঠন করার আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্ট গিয়েছিলেন BJP-র অযোধ্যা শাখার মিডিয়া ইনচার্জ রজনীশ সিং। কিন্তু, তাঁরও আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত।

তাজমহল
SSC Scam: ২১০০০ পদে নিয়োগে দুর্নীতি! 'কাউকে ছাড়া হবে না' - হুংকার বিচারপতি বসুর

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in