Mashco Piro: নির্বিচারে জঙ্গল নিধন - পেরুর ঘন জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসছেন আদিম জনগোষ্ঠী মাশকো পিরোরা

People's Reporter: পেরুর আমাজনের যে অঞ্চলে এই আদিম জনগোষ্ঠীর বসবাস ছিল সে অঞ্চলের বিশাল অংশের গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। ফলে কিছুটা বাধ্য হয়েই বিকল্প বাসস্থানের সন্ধানে তাঁরা বাইরে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন।
জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসেছেন মাশচো পিরো জনগোষ্ঠীর মানুষরা
জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসেছেন মাশচো পিরো জনগোষ্ঠীর মানুষরাছবি সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল ডট ওআরজি-র সৌজন্যে
Published on

পেরুর অন্তর্গত অ্যামাজন অরণ্যের মাশকো পিরো (Mashco Piro) জনগোষ্ঠীর মানুষদের জঙ্গল ছেড়ে বেরিয়ে আসার বেশ কিছু ছবি প্রকাশিত হয়েছে। যে ছবি ঘিরে ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কারণ মূলত জঙ্গলে বসবাস করা এবং বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ না রেখে চলা এই প্রাচীন জনগোষ্ঠী বাধ্য হয়েছে জঙ্গল ছেড়ে বেরিয়ে এসেছে। জানা গেছে, পেরুর যে অঞ্চলে এই আদিম জনগোষ্ঠীর বসবাস ছিল সেই অঞ্চলের বিশাল অংশের গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। ফলে কিছুটা বাধ্য হয়েও বিকল্প বাসস্থানের সন্ধানে তাঁরা বাইরে বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে পরিবেশবিদরা জানাচ্ছেন, অবিলম্বে এই অঞ্চলের সমস্ত লাইসেন্স প্রত্যাহার করে কাজ বন্ধ করা হোক। কারণ মনে করা হয় বিশ্বের বৃহত্তম আদিম উপজাতিদের একটি হল এই মাশকো পিরো গোষ্ঠী। যারা বহির্জগতের সঙ্গে যোগাযোগবিহীনভাবেই জীবনধারণ করতে অভ্যস্ত।

সাম্প্রতিক সময়ে, দক্ষিণ পূর্ব পেরুর মন্টে সালভাডোর ইয়েন গ্রামের কাছে ৫০ জনেরও বেশি মাশকো পিরো জনগোষ্ঠীর মানুষকে দেখা গেছে। অন্য একটি ঘটনায় মাশকো পিরো জনগোষ্ঠীর ১৭ জনের একটি দলকে পুয়ের্তো নুয়েভোর পার্শ্ববর্তী গ্রামের কাছে দেখা গেছে।

মাশকো পিরোদের উপস্থিতি নিশ্চিত করেছে ইয়েন নামের অন্য এক জনগোষ্ঠী। এঁরা এক বিশেষ সাংকেতিক ভাষায় মাশকো পিরো জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কথাবার্তা চালাতে সক্ষম। অতীতে এই ইয়েন জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, মাশকো পিরো জনগোষ্ঠীর মানুষরা তাদের গ্রামে এসেছিলেন এবং জঙ্গল কেটে ফেলার বিষয়ে ক্রোধের সঙ্গে আপত্তি জানিয়েছেন।

মাশকো পিরো জনগণের বসবাসের অঞ্চলের মধ্যে বেশ কিছু কোম্পানিকে কাঠের জন্য বরাত দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি মাশকো পিরোদের যে ছবিগুলো প্রকাশ্যে এসেছে সেখান থেকে সবচেয়ে কাছের যে জঙ্গল কাটা হচ্ছে তার দূরত্ব মাত্র কয়েক মাইল।

ক্যানালেস তাহুয়ামানু নামের এক সংস্থা বর্তমানে মাশকো পিরো অঞ্চলের মধ্যে কাজ করছে। জঙ্গল থেকে কাঠ কাটা এবং বহন করার জন্য তারা ২০০ কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তা তৈরি করেছে। এফএসসি (ফরেস্ট স্টুয়ার্ডশিপ কাউন্সিল) এই তথ্য জানিয়েছেন। যদিও পেরুর সরকার আট বছর আগেই জানিয়েছিলে মাশকো পিরো অঞ্চলের মধ্যেকার গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে।

সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল (survivalinternational.org) FSC-কে কোম্পানির কার্যক্রমের সার্টিফিকেশন প্রত্যাহার করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। ৮ হাজারের বেশি মানুষ ইতিমধ্যেই এফএসসিতে এই দাবি পেশ করেছে।

স্থানীয় আদিবাসী সংস্থা ফেনামাডের সভাপতি আলফ্রেডো ভার্গাস পিও জানিয়েছেন: “এই ছবিই অকাট্য প্রমাণ যে বহু মাশকো পিরো জনগোষ্ঠীর মানুষ এই এলাকায় বাস করে, যাদের রক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার এবং প্রকৃতপক্ষে তাদের বসবাসের অঞ্চল বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করেছে৷

এই অঞ্চলে অন্যান্য অঞ্চল থেকে আগত শ্রমিকরা নতুন রোগ নিয়ে আসতে পারে যা মাশকো পিরো জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করে দেবে। এছাড়াও যে কোনও সময় দুই পক্ষের মধ্যে হিংসা ছড়াতে পারে। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল এবং মাশকো পিরো জনগোষ্ঠীর আঞ্চলিক অধিকারগুলি স্বীকৃত এবং আইনে সুরক্ষিত।

সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল ডিরেক্টর ক্যারোলিন পিয়ার্স বলেন, “এটি একটি মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। তাই শ্রমিকদের এই অঞ্চল থেকে বের করে দিয়ে অঞ্চলটি মাশচো পিরোদের জন্য সুরক্ষিত রাখা উচিত এবং এফএসসিকে অবিলম্বে ক্যানালেস তাহুয়ামানুর সংস্থার কাঠ কাটার অনুমতি প্রত্যাহার করা উচিত।”

জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসেছেন মাশচো পিরো জনগোষ্ঠীর মানুষরা
Odisha: ওড়িশার লাল পিঁপড়ের চাটনি পেল GI ট্যাগ
জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসেছেন মাশচো পিরো জনগোষ্ঠীর মানুষরা
Award Wapsi: রাজনৈতিক কারণে ফেরানো যাবে না পুরস্কার, আগেই দিতে হবে মুচলেকা! - প্রস্তাব সংসদীয় কমিটির

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in