পূর্ব রেলের শ্রীরামপুর স্টেশনে ৫৩ বছরের পুরোনো বুক স্টল তুলে দেবার প্রতিবাদে স্বাক্ষর সংগ্রহে নামলেন নাগরিকরা। শ্রীরামপুর সাংস্কৃতিক সমন্বয় মঞ্চের উদ্যোগে এই চেঞ্জ ডট ওআরজি (change.org)-র মাধ্যমে স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। সম্প্রতি ভারতীয় রেলের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিনের এই বুক স্টল তুলে দেবার সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, শ্রীরামপুর স্টেশনে জৈন বুক স্টল নামক এই বইয়ের দোকান গত ৫৩ বছর ধরে চলছে। এই দোকানের মালিক অভিষেক জৈন। স্থানীয় মানুষের কাছে এই বইয়ের স্টল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মঞ্চের সদস্য বিভাস গুপ্ত তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোষ্টে লিখেছেন, "শ্রীরামপুরের ১ নং প্ল্যাটফর্মের বই-এর দোকানটি আজ বন্ধ হবার মুখে। এটা একটা গুরুতর অপরাধ। রেল এক সময় বুকস্টল করেছিল যাত্রীদের অবসর বিনোদনের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক চর্চার জন্যও। আজ সবই বাণিজ্যমুখী করে তোলা হচ্ছে।"
রেলমন্ত্রকের কাছে লেখা এক চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, “আমরা, নিম্নস্বাক্ষরকারীরা, পশ্চিমবঙ্গের শ্রীরামপুর স্টেশনে ৫৩ বছর ধরে চলা বুকস্টলটি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা এবং প্রত্যাহার করার জন্য রেল মন্ত্রক, ভারতকে অনুরোধ করছি।”
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এই বুকস্টল সংলগ্ন এলাকায় সরকারি চাকরি প্রার্থীদের জন্য একটি মূল্যবান সম্পদ। এটি বন্ধ করা হলে তা শুধুমাত্র মালিকের জীবিকাকে প্রভাবিত করবে না বরং অনেক সাধারণ মানুষও ক্ষতির মুখে পড়বেন। বিশেষত যারা তাদের পড়াশুনা বা চাকরির পরীক্ষা সংক্রান্ত বইয়ের জন্য এই দোকানের অপর নির্ভরশীল।
চিঠিতে জানানো হয়েছে, বুকস্টলটি পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে স্টেশনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমরা স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের শিক্ষাগত এবং কর্মজীবনের প্রয়োজনের জন্য এই স্টলের উপর নির্ভর করি।
রেলমন্ত্রকের কাছে করা ওই আবেদনে বলা হয়েছে, আমরা আশা করি যে রেল মন্ত্রক স্থানীয় মানুষের অনুভূতি এবং বইয়ের স্টলটির তাত্পর্যকে বিবেচনায় রেখে এই বুক স্টলটি তুলে দেবার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করবে।
এই প্রসঙ্গে রাজা পোদ্দার নামক এক ব্যক্তি তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোষ্টে লিখেছেন, “নাঃ খাওয়ার বিরুদ্ধে আমরা নই… মানুষ খিদে পেলে তো বই খাবে না, খাবারই খাবে। তাই বই এর সঙ্গে খাদ্য-খাবারের কোনও বিরোধ থাকা উচিত বলে মনে করি না। কিন্তু তা বলে একটি রেলস্টেশনে একটি ৫৩ বছরের পুরনো বইয়ের দোকান তুলে সেখানে 'মাল্টি পারপাস স্টল' এর নামে খাবারের দোকানের তীব্র বিরোধিতা করছি।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন