CBSE বোর্ডের দ্বাদশ-দশম শ্রেণির ইতিহাস পাঠ্যপুস্তক থেকে মুঘল সাম্রাজ্য সহ একাধিক অধ্যায় বাদ দিয়েছে এনসিইআরটি। এই নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করলেন দেশের বিশিষ্ট ইতিহাসবিদরা। এক বিবৃতিতে রোমিলা থাপার, ইরফান হাবিবরা স্পষ্ট জানিয়েছেন, এনসিইআরটির এই সিদ্ধান্তে আতঙ্কিত তাঁরা। পাশাপাশি ‘হোয়াটসঅ্যাপে ইতিহাস ছড়িয়ে দেওয়ার’ প্রবণতা নিয়ে কটাক্ষও করেছেন তাঁরা।
বিবৃতিতে রোমিলা থাপার, ইরফান হাবিব ছাড়াও স্বাক্ষর করেছেন জয়তী ঘোষ, মৃদুলা মুখার্জি, অপূর্বানন্দ, উপিন্দর সিংহের মতো বিশিষ্ট ইতিহাসবিদরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ইন্দিরা গান্ধী জাতীয় উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, হায়দ্রাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়।
অতিমারিতে দীর্ঘদিন পড়াশোনা থেকে দূরে ছিল পড়ুয়ারা। আচমকা তাদের উপর অতিরিক্ত চাপ যাতে তৈরি না হয়, তাই পাঠ্যক্রমে কিছু কাটছাঁট করা হচ্ছে বলে দাবি করেছে এনসিইআরটি।
যদিও এনসিইআরটির এই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন ইরফান হাবিবরা। শুক্রবার জারি করা এক বিবৃতিতে তাঁরা জানিয়েছেন, “মহামারী ও লকডাউনের সময়কাল উল্লেখ করে পাঠ্যক্রমের বোঝা হালকা করার যুক্তি দিয়ে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির সামাজিক বিজ্ঞান, ইতিহাস এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তক থেকে মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাস, গুজরাটের ২০০২ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, জরুরী অবস্থার মতো বিষয়গুলি বাদ দিয়েছে এনসিইআরটি।“
“এখন তো আর দেশে কোভিড পরিস্থিতি নেই। এখন তো স্কুলে পড়াশোনাও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে গিয়েছে। অনলাইনেও এখন পড়াশোনা হয় না। তা হলে এখনও কেন পাঠ্যক্রম কাটছাঁট করা হচ্ছে?”, প্রশ্ন ইতিহাসবিদদের।
নিউজক্লিকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুসারে, শিক্ষায় রাজনীতি ঢোকানোর প্রচেষ্টা করা হচ্ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। তাঁরা বলেছেন, "এভাবে একচেটিয়াভাবে ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তক কাটছাঁট করার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ছদ্ম ইতিহাসের জমি তৈরি করা হচ্ছে, বিশেষ করে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায় এবং বর্ণবাদী বৈচিত্র্যের জন্য। বর্তমানে এই ধরনের ছদ্ম ইতিহাস হোয়াটসঅ্যাপ এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করার একটি প্রচেষ্টা দেখা যায়।"
তবে ঐতিহাসিক তথ্য চাপা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে এনসিইআরটি। এনসিইআরটি জানিয়েছে, পাঠ্যপুস্তক কমানোর সিদ্ধান্তের পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। কেন্দ্র এবং রাজ্যগুলির স্কুল শিক্ষা নিয়ে তৈরি শীর্ষ উপদেষ্টা মণ্ডলীর উপদেশ মেনে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন