এক চোখের দৃষ্টিশক্তি ও এক হাতের শক্তি হারিয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ‘বুকার জয়ী’ ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক সালমান রুশদি (Salman Rushdie)। সোমবার, স্প্যানিশ সংবাদপত্র এল পাইস (El País)-কে এই তথ্য জানিয়েছেন রুশদির সাহিত্যিক এজেন্ট অ্যান্ড্রু ওয়াইলি (Andrew Wylie)।
গত ১২ আগস্ট, নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানের মাঝে অতর্কিত রুশদির ওপর ছুরি নিয়ে হামলা চালায় হাদি মাতার নামে এক যুবক। সে সময় অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেলেও, একটি চোখ ও হাত হারাতে হয়েছে সালমান রুশদিকে।
অ্যান্ড্রু ওয়াইলি জানিয়েছেন, 'তাঁর ক্ষত গভীর। তবে, তিনি একটি চোখের দৃষ্টিশক্তি আজীবনের জন্য হারিয়েছেন। তাঁর গলায় গুরুতর তিনটি ক্ষত ছিল। তাঁর বাহুর স্নায়ু কেটে যাওয়ায় অক্ষম হয়ে গেছে একটি হাত। এখনও বুকে ১৫টি গভীর ক্ষত রয়েছে। এটি খুবই নৃশংস আক্রমণ ছিল।'
রুশদি এখনো হাসপাতালে আছেন কি না, এই প্রশ্নে ওয়াইলি বলেন, 'তাঁর অবস্থান সম্পর্কে আমি তথ্য জানাতে পারব না। তিনি যে বেঁচে আছেন, এটাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।'
১৯৮৮ সালে প্রকাশিত হয় রুশদির চতুর্থ উপন্যাস- 'দ্য স্যাটানিক ভার্সেস' (The Satanic Verses)। এই উপন্যাস প্রকাশের পর হত্যার হুমকি পান তিনি। ১৯৮৯ সালে রুশদির মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া জারি করেছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।
এরপর, গত ১২ অগাস্ট নিউ ইয়র্কের একটি ইনস্টিটিউটের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেখক সলমন রুশদি৷ এমন সময় কালো পোশাক পরে- মঞ্চে উঠে ধারালো অস্ত্র দিয়ে রুশদিকে এলোপাথাড়ি কোপায়৷ এ ঘটনায় আটক হয় ২৪ বছর বয়সী সন্দেহভাজন মার্কিন তরুণ হাদি মাতার।
তবে, এই হামলার পর হামলাকারীর সঙ্গে কোনো যোগসূত্র অস্বীকার করেছে ইরান। এর আগে, সালমান রুশদির উপর 'নৃশংস হামলার' নিন্দা জানিয়েছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, 'ভারত সবসময় হিংসা ও চরমপন্থার বিরোধী৷ সলমন রুশদির উপর যে বীভৎস হামলা হয়েছে তার নিন্দা আমরা করছি৷ আমরা চাই, তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন৷'
১৯৪৭ সালে, মুম্বাইয়ে জন্ম রুশদির। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার আগে তিনি ইংল্যান্ডের বোর্ডিং স্কুলে পড়াশুনা করেন। ২০০৭ সালে, সাহিত্য সেবার জন্য নাইট উপাধি লাভ করেন তিনি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন