ব্রিটেনের নির্বাচনে লেবার পার্টির কাছে পর্যুদস্ত কনজারভেটিভরা। মোট ৬৫০ আসনের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৩৮৭ আসনে জয়ী হয়েছেন কিয়ের স্টারমারের লেবার পার্টির প্রার্থীরা। অন্যদিকে ঋষি শুনকের কনজারভেটিভ পার্টি এখনও পর্যন্ত জয়ী হয়েছে ৯৬ আসনে। ব্রিটেনে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ৩২৬ আসন। গণনা যত এগোচ্ছে ততই পিছিয়ে পড়ছেন রক্ষণশীলরা। ইতিমধ্যেই পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন কনজারভেটিভ দলের প্রধান এবং প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক। ২০১০ সালের পর এই প্রথম ক্ষমতাচ্যুত হল কনজারভেটিভরা।
নির্বাচনে অভূতপূর্ব জয়ের পর লেবার পার্টির প্রধান কিয়ের স্টারমার সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, ব্রিটেনের নতুন যাত্রা শুরু হল। ব্রিটেনের জনসাধারণকে ধন্যবাদ। আমরা এই ফলাফলের জন্য লড়াই করেছে এবং আমরা পেরেছি। ব্রিটেন আবার সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। এই জয় ব্রিটেনের মানুষের জন্য নতুন আশা। এই জয় আমাদের ওপর অনেক দায়িত্ব অর্পিত করেছে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে জয় আকাশ থেকে পড়েনা। কঠোর পরিশ্রম, কঠিন লড়াই করে সেই জয় অর্জন করতে হয়। আমরা তা পেরেছি।
ব্রিটেনে ভোটের আগে জনমত সমীক্ষাতেই বলা হয়েছিল বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকারে আসতে চলেছে লেবার পার্টি। নির্বাচনের ফলাফলের গতিপ্রকৃতি সামনে আসার পরেই এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনক জানিয়েছেন, লেবার পার্টি এই নির্বাচনে জয়লাভ করেছে এবং আমি স্যার কিয়ের স্টারমারকে এই জয়ের জন্য অভিনন্দন জানাচ্ছি। আজ শান্তিপূর্ণভাবে ব্রিটেনের শাসন ক্ষমতার হাতবদল হল। আমি অত্যন্ত দুঃখিত। আমি এই পরাজয়ের দায়িত্ব স্বীকার করছি।
লেবার পার্টির এই অভূতপূর্ব জয়ের পর ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন কিয়ের স্টারমার। যদিও তিনি এক সময় ক্ষমতায় বসতে চলেছেন যখন অর্থনৈতিক বিষয়ে সহ একাধিক বিষয়ে ঘোরতর সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে গ্রেট ব্রিটেনকে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে যা প্রথম থেকেই সমস্যায় ফেলতে পারে লেবার পার্টির প্রধানকে।
ব্রিটেনের লেবার পার্টির প্রাক্তন নেতা জেরেমি করবিন লেবার পার্টির প্রার্থীকে পরাজিত করে নিজের ইসলিঙটন নর্থ আসনে জয়লাভ করেছেন। এবারের নির্বাচনে তিনি নির্দল প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।
এই নির্বাচনে কনজারভেটিভ দলের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ব্রিটেনের বর্তমান প্রতিরক্ষা সচিব গ্রান্ট শেপস, কমনস নেতা পেনি মোরডান্ট এবং প্রাক্তন মন্ত্রী স্যার জ্যাকব রিস মগ পরাজিত হয়েছেন।
কনজারভেটিভ এবং লেবার পার্টি ছাড়াও এবারের নির্বাচনে লিবারাল ডেমোক্র্যাটরা ৫৬ আসনে জয়ী হয়েছেন। যা সাম্প্রতিক অতীতে ওই দলের পক্ষে সবথেকে ভালো ফলাফল।
উল্লেখযোগ্যভাবে পরাজয়ের পর কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী পেনি মরড্যান্ট সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, দল মানুষের আস্থার মর্যাদা দেয়নি বলেই এবারের ভোটে মানুষ কনজারভেটিভদের পরাজিত করেছে।
এবারের নির্বাচনে ঋষি সুনক তাঁর কেন্দ্রে গতবারের নির্বাচনের তুলনায় ১৫ শতাংশ ভোট কম পেয়েছেন। এবার তিনি ভোট পেয়েছেন ৪৭.৫%। এই কেন্দ্রে লেবার পার্টির টম উইলসন পেয়েছেন ২২.৪ শতাংশ ভোট।
অন্যদিকে হলবরন অ্যান্ড সেন্ট প্যানক্র্যাস কেন্দ্রে লেবার পার্টির কিয়ের স্টারমার পেয়েছেন ৪৮.৯ শতাংশ ভোট। ওই কেন্দ্রে দ্বিতীয় স্থানে আছেন নির্দল প্রার্থী অ্যান্ড্রু ফেইনস্টিন (১৮.৯%)। তৃতীয় স্থানে আছেন গ্রিন পার্টির প্রার্থী ডেভিড স্ট্যানসেল (১০.৪%) এবং চতুর্থ স্থানে কনজারভেটিভ প্রার্থী মেহরিন মালিক (৭.২%)।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন