দক্ষিণ আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ইস্ট লন্ডনের এক নাইট ক্লাবে একসাথে ২২ কিশোরের আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু করলো পুলিশ। রবিবার (২৭ জুন) রাতে ক্লাবের মধ্যে ওই কিশোরদের মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এই মৃতদের সকলের বয়স ১৮-এর নীচে। জোহানেসবার্গ থেকে প্রায় ৬২০ মাইল দক্ষিণে, ভারত মহাসাগরের উপকূলে অবস্থিত এই ক্লাবের বাইরে সোমবার সকাল থেকে জড়ো হয়েছেন মৃত তরুণদের বাবা-মা, পরিবারবর্গ।
কোন অজানা কারণে মৃত্যু হয়েছে এই ২২ জনের তা এখনও স্পষ্ট নয়। বিশেষজ্ঞরাও এখনও এই মর্মান্তিক ঘটনার সঠিক কারণ অনুসন্ধান করে উঠতে পারেনি। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্কুল ছুটির পর এই ক্লাবে ওই কিশোররা পার্টি করছিলেন (পেনস ডাউন পার্টি)। ভোর ৪টের সময় স্থানীয়রা গোলমাল শুনে ক্লাবের কাছে গিয়ে দেখেন তারা মেঝেতে, চেয়ারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে। যা দেখে আপাতভাবে মনে হবে তারা সকলেই নেশাতুর অবস্থায় ঘুমোচ্ছে, হুঁশ নেই তাঁদের কারও। আসলে তারা সকলেই মৃত।
পুলিশমন্ত্রী ভেকি কেলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রথমে আমাদের বলা হয়েছিল পদপৃষ্ট হওয়ার কারণে কয়েকজন তরুণের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু এখানে এসে পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে পদপৃষ্টের কোনো ঘটনা ঘটেনি। মৃত্যুর কারণ নিয়ে কোনোরকম অনুমানমূলক কথা আমি বলতে চাইনা। সেরা ফরেনসিক টিমকে নিয়ে আসা হয়েছে ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করতে। সিনারি পার্ক নামে পরিচিত এই জায়গায় ঘটনাটি ঘটার পরেই তৎক্ষণাৎ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নেশাগত বা বিষজাতীয় কোনো দ্রব্য সেবন করা হয়েছে কিনা তার জন্য মৃতদেহগুলিকে পরীক্ষা করা হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা মৃত তরুণদের পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়েছেন। ১৮ বছরের কম বয়সী তরুণরা কিভাবে এই জায়গায় প্রবেশ করলেন এবং কিভাবে এই ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে বিশেষ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
লোলি নামের এক ১৭ বছর বয়সী কিশোরী ঘটনাস্থলের কাছেই থাকতেন। তিনি জানান, যে জায়গাটিতে এই ঘটনাটি ঘটেছে, তা এক পুরনো ফ্যাক্টরি। জায়গাটি তরুণদের আড্ডার ঠেক হিসেবে জনপ্রিয় ছিল। রবিবার রাতে সেখানে এসে জড়ো হয় অনেকে। এটা আসলে সর্বপ্রকার নেশাগত দ্রব্য সেবন ও বিক্রির ঠেক ছিল।
এই ২২জন কিশোরের মৃত্যুর কারণ এখনও জানা যায়নি। প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, কিশোরদের মৃতদেহে কোন ক্ষত বা আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। সোশ্যাল মিডিয়ায় কিশোরদের ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা মৃতদেহের একাধিক ছবি ভাইরাল হয়েছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন