সুইজারল্যান্ডে প্রথমবার 'সুইসাইড পড' ব্যবহার করে আত্মহত্যা ৬৪ বছরের বৃদ্ধার! গ্রেফতার চার

People's Reporter: সোমবার 'সুইসাইড পড' নামক যন্ত্রের সাহায্যে স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করেন ৬৪ বছর বয়সী আমেরিকান এক বৃদ্ধা। বৃদ্ধাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে চারজনকে।
সুইসাইড পড
সুইসাইড পডছবি - সংগৃহীত
Published on

এক মিনিটের কম সময়ে স্বেচ্ছায় মৃত্যু। তাও আবার কোনওরকমের ব্যাথা বেদনা ছাড়াই। সম্প্রতি এমনই যন্ত্রের প্রথম ব্যবহার হল সুইজারল্যান্ডে। আর তারপরেই বাঁধে বিপত্তি। এই ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করেছে সুইজারল্যান্ডের পুলিশ।

সুইৎজারল্যান্ড-জার্মানির সীমান্তবর্তী শ্যাফহাউসেনের পুলিশ জানিয়েছে, গত সোমবার 'সুইসাইড পড' নামক যন্ত্রটি স্থানীয় এক মাঠে বসানো হয়। সেখানেই এই যন্ত্রটি প্রথমবারের মতো ব্যবহৃত হয়। স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ করেন ৬৪ বছর বয়সী আমেরিকান এক বৃদ্ধা। সূত্রের খবর, ওই বৃদ্ধাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া এবং সহায়তার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে চারজনকে। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন - ওই যন্ত্র প্রস্তুতকারী সংস্থার সহ-সভাপতি ফ্লোরিয়ান উইলেট, এক ডাচ সাংবাদিক এবং দুই সুইস নাগরিক।

এ বিষয়ে সুইজারল্যান্ডের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এলিজাবেথ বাউমে-শ্লেইডার সোমবার জানিয়েছেন, এই যন্ত্রটি পণ্য সুরক্ষা আইনের প্রয়োজনীয় শর্তগুলি পূরণ করে না। তা ছাড়া ওই যন্ত্রে নাইট্রোজেনের ব্যবহারও আইনসম্মত নয়। যদিও সরকারের এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে ‘সুইসাইড পড’ প্রস্তুতকারী সংস্থা। তাদের দাবি, ওই যন্ত্র ব্যবহারে তাদের আগেই আইনি ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল।

কী এই 'সুইসাইড পড'?

যন্ত্রটির নাম ‘সারকো পড ক্যাপসুল’। এর আকৃতি গোলাকার। অনেকটা কফিনের মতো দেখতে এটি। ২০১৯ সালে যন্ত্রটির প্রাথমিক প্রোটোটাইপ তৈরি হয়। এর পর ২০২১ সালে ব্যবহারে আইনি ছাড়পত্র পায়। যন্ত্রটি যেখানে প্রয়োজন, সেখানেই নিয়ে যাওয়া যায় এই সারকোকে। মূল মেশিন থেকে বিচ্ছিন্ন করলে একে দেখতে লাগে খানিকটা কফিনের মতো। সেই কফিনে একবার শুয়ে পড়লেই নিমেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ব্যবহারকারী।

জানা গেছে, যন্ত্রটিতে কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা রয়েছে। কফিনে ঢুকে আত্মহত্যায় ইচ্ছুক ব্যক্তি একটি বোতাম টিপলেই নাইট্রোজেনে ভরে যায় ক্যাপসুলটির ভিতরে। প্রথমে অক্সিজেন কমে আসায় অস্বস্তি বোধ করলেও ধীরে ধীরে জ্ঞান হারান ওই ব্যক্তি। এর পর কিছু ক্ষণের মধ্যেই হাইপোক্সিয়া এবং হাইপোক্যাপনিয়ায় মারা যান ওই ব্যক্তি।

শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি সুইজারল্যান্ডে আত্মহত্যার অধিকার আছে নাগরিকদের। সেখানে আত্মহত্যায় সহায়তা করাও আইনত বৈধ। শুধুমাত্র ২০২০ সালেই ১৩০০ ব্যক্তিকে আত্মহত্যায় সহায়তা করা হয়েছিল।

(এখানে আত্মহত্যা প্রতিরোধ হেল্পলাইন নম্বর দেওয়া আছে। আপনি বা আপনার পরিচিত কারোর সহায়তার প্রয়োজন হলে অনুগ্রহ করে যোগাযোগ করুন। সর্বভারতীয় হেল্পলাইন নম্বর - ০২২-২৭৫৪৬৬৬৯)

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in