বিশ্বজুড়ে আধুনিক দাসত্বের (modern slavery) শিকার হওয়া মানুষের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এক গবেষণা রিপোর্টে এই দাবি করেছে মানবাধিকার সংস্থা- ‘ওয়াক ফ্রি’ (Walk Free)।
বুধাবার ‘গ্লোবাল স্লেভারি ইনডেক্স’ (Global Slavery Index) প্রকাশ করে ওয়াক ফ্রি জানিয়েছে - ‘২০২১ সালে ‘আধুনিক দাসত্বের’ শিকার হয়েছেন প্রায় প্রায় ৫ কোটি মানুষ। অর্থাৎ, সারা বিশ্বে প্রতি ১৫০ জন পিছু ‘আধুনিক দাসত্বের’ শিকার হয়েছেন ১ জন মানুষ।'
আধুনিক দাসত্ব কি?
রিপোর্টে আধুনিক দাসত্বের একটি ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, আধুনিক দাসত্বের মধ্যে রয়েছে, জোরপূর্বক শ্রম, ঋণ, জোরপূর্বক বিবাহ, দাসত্ব এবং দাসত্ব এবং মানব পাচারর মতো কয়েকটি প্রথা।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, 'আধুনিক দাসত্ব সরল দৃষ্টিতে লুকিয়ে আছে। এটি বিশ্বের প্রতিটি কোণে জীবনের সাথে গভীরভাবে জড়িত। প্রতিদিন, মানুষ প্রতারিত, জোরপূর্বক বা শোষণমূলক পরিস্থিতিতে পড়তে বাধ্য হচ্ছে।'
ওয়াক ফ্রি জানিয়েছে, পাঁচ বছর আগের তুলনায় এটি বৃদ্ধি পেয়েছে। কোভিড মহামারী এই ঝুঁকি আরও বাড়িয়েছে। কারণ, মহামারীতে অনেক শ্রমিকের পরিস্থিতি ও ঋণের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও সশস্ত্র সংঘাতে চাকরির বাজার, শিক্ষা, হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যা এবং জোরপূর্বক ও অনিরাপদে দেশান্তর বেড়েছে নজিরবিহীনভাবে।'
রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে আধুনিক দাসত্বের শৃঙ্খলে আটকা পড়া মানুষের সংখ্যা এখন পাঁচ কোটি। এ হার সবচেয়ে বেশি উত্তর কোরিয়া ও ইরিত্রিয়ায়।
এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নারী ও শিশুরা। বাধ্যতামূলক শ্রমের শিকার হয়েছে প্রতি পাঁচজনের একজনই শিশু। এর মধ্যে অর্ধেক বাণিজ্যিকভাবে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, আধুনিক দাসত্বের মধ্যে ২ কোটি ৭৬ লক্ষ মানুষ বাধ্যতামূলক শ্রমে যুক্ত। আর, জোরপূর্বক বিবাহের শিকার হয়েছেন ২ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ।
ওয়াক ফ্রি জানিয়েছে, ভারতে আধুনিক দাসত্বের শিকার হয়েছেন ১ কোটি ১০ লক্ষ মানুষ, চীনে এই সংখ্যা ৫০ লক্ষ, আর রাশিয়াতে আধুনিক দাসত্বের শিকার হয়েছেন ১০ লক্ষ ৮০ হাজার মানুষ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন