উইম্যান পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি তালিকায় বিশ্বের সমস্ত দেশের মধ্যে সবথেকে নীচে রয়েছে আফগানিস্তান। তালিবানিদের হাতে এই দেশের নিয়ন্ত্রণ যাবার পর সে দেশের নারীদের সম্পূর্ণ বৈষম্যের আশঙ্কায় তারা শেষ স্থানে পৌঁছেছে।
জর্জটাউন ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট ফর উইমেন, পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি কর্তৃক প্রকাশিত এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, আফগানিস্তান ১৭০ টি দেশের মধ্যে ১৭০তম স্থানে রয়েছে।
জর্জটাউন ইনস্টিটিউট ফর উইমেনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জেনি ক্লুগম্যান বলেন, আফগানিস্তান ১৭০ টি দেশের মধ্যে শেষ স্থানে নেমে এসেছে। দেশটির চূড়ান্ত স্কোর ২০১৭ সালের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে। মূলত মহিলাদের শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সময়ে গুরুতর প্রশ্ন ওঠায় তাদের এই অবনমন।
আগস্টে তালিবানি দখলদারির পর মহিলাদের ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য আরও অবনমন ঘটেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আশংকা, তালিবানি শাসনের অধীনে যত সময় যাবে, দেশে শান্তি ও নিরাপত্তা এবং মহিলারা একই অবস্থায় থাকতে পারেন বা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে "আগামীদিনের তথ্য থেকে দেখা যাবে যে আগস্টে আফগানিস্তানের তালিবানিদের দখলদারির পর পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে"।
অর্গানাইজেশন ফর পলিসি অ্যান্ড রিসার্চ স্টাডিজের (ডিআরওপিএস) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মরিয়ম সাফি বলেন, "এই সূচকের ফলাফলগুলি যা আগের চেয়ে বেশি উদ্বেগজনক করে তুলেছে তা হল টেলিভিশন ফিরে আসার পর, সূচীতে উল্লেখিত এই সূচকগুলির অনেক ক্ষেত্রেই আরও অবনতি হবে বলে অনুমান।"
প্রতিবেদনে আফগানিস্তানের তৃণমূল স্তরের বাস্তবতার উপর আলোকপাত করা হয়েছে এবং বিশ্বের ১৭০ টি দেশে নারীরা কীভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তার মূল্যায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি তুলে ধরেছে।
সূচকে শীর্ষ আছে তিনটি দেশ - নরওয়ে, ফিনল্যান্ড এবং আইসল্যান্ড। অন্যদিকে শেষ ১২ টি দেশ, যার মধ্যে কমপক্ষে ১১ টির পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। পাকিস্তান এই তালিকায় ১৬৭তম স্থানে আছে।
আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে, বিশ্ব এখনও তালিবানিদের প্রতিশ্রুতি পূরণের অপেক্ষায় আছে। মহিলাদের শিক্ষার অধিকার এবং স্বাধীনতা প্রদানের যে প্রতিশ্রুতি তারা দিয়েছে তা আদৌ পূরণ করা হয় কিনা তা নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ চিন্তিত। কারণ, এখনও পর্যন্ত দেশে মহিলাদের শিক্ষার জন্য বিদ্যালয় খুলে দেওয়া বা মহিলাদের অধিকার পুনরুজ্জীবনের কোন লক্ষণ বাস্তবে দেখা যায়নি।
আফগান মহিলাদের কাছে এই মুহূর্তে আশা করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। তালিবানিদের ওপর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চাপের ফলে বর্তমান বৈষম্য থেকে কিছুটা হয়তো মুক্তি পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু তারা ভোগান্তির শিকার হতে পারেন। হয়তো তাদের নিজ দেশে বসবাসের জন্য চরম মূল্য দিতে হতে পারে।
- with Agency Input
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন