তালিবানি দখলদারির পর আগামী চার মাসে পাঁচ লক্ষের বেশি আফগান নাগরিক যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান ছেড়ে অন্য দেশে পাড়ি দেবেন। এই সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘের রিফিউজি এজেন্সি (UNHCR)।
শনিবার প্রকাশিত এক বিবৃতিতে UNHCR জানিয়েছে, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং দেশের প্রাক্তন সরকারের ভেঙে পড়ার ফলে আফগানিস্তান থেকে বড়ো সংখ্যায় সাধারণ নাগরিক দেশ ছাড়তে বাধ্য হবেন। টোলো নিউজ তাদের এক প্রতিবেদনে একথা জানিয়েছে।
ডেপুটি হাইকমিশনার কেলি টি ক্লিমেন্টস জানিয়েছেন, যদিও এই মুহূর্তে বড়ো সংখ্যায় আফগান নাগরিকদের দেশ ছাড়তে দেখা যাচ্ছেনা, কিন্তু আফগানিস্তানের পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে যে কোনো সময় বড়ো সংখ্যায় মানুষ দেশ ছাড়তে বাধ্য হবেন। যে সংখ্যা অনুমানের থেকেও বেশি হবে বলে তাঁর আশঙ্কা। UNHCR ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশগুলোর সীমান্ত আফগান নাগরিকদের জন্য খোলা রাখবার আবেদন জানিয়েছে।
ইতিমধ্যেই ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (WFP) পক্ষ থেকে রাষ্ট্রসংঘের কাছে ১২ মিলিয়ন ইউ এস ডলার সাহায্য চেয়েছে। আফগান নাগরিকদের খাদ্যের ব্যবস্থা করার জন্য আগামী দিনে এই অর্থের প্রয়োজন হবে বলে জানিয়েছে এই সংস্থা।
আফগান নাগরিকদের একটা বড়ো অংশ মনে করছেন, দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা, বেকারি এবং নিরাপত্তার প্রশ্নে তাঁরা খুব তাড়াতাড়ি দেশ ছাড়তে বাধ্য হবেন। এখনও কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে কয়েক হাজার মানুষ দেশ ছেড়ে যাবার জন্য অপেক্ষা করছেন।
আফগান নাগরিক হাবিবুল্লাহ সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজকে জানিয়েছেন, “আমি গত চার বছর ধরে বিদেশীদের সঙ্গে কাজ করেছি। কিন্তু এখন আমি বেকার। আমি শুনেছি যারা বিদেশীদের সঙ্গে কাজ করেছে তালিবানিরা তাঁদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে, খুঁজে বেড়াচ্ছে। তালিবানিরা ওদের মেরে ফেলবে। তাই আমি দেশ ছাড়তে চাই।”
হাবিবুল্লাহর ছেলে এজাতুল্লা জানিয়েছেন, “বেকারি এবং নিরাপত্তার প্রশ্নে তাঁরা দেশ ছেড়ে চলে যেতে চাইছেন। আমরা এমন কোনো দেশে যেতে চাইছি যেখানে আমাদের জীবন রক্ষা পাবে।”
আফগান মহিলাদের একটা বড়ো অংশ জানাচ্ছেন, তাঁরা এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁরা পড়াশুনো করেছেন এবং কঠোর পরিশ্রম করেন। কিন্তু তাঁদের ভবিষ্যৎ কী তা তাঁরা কেউ জানেন না।
কাবুল নিবাসী রহিলা এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, “আমরা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করেই আফগানিস্তানে পড়াশুনো করেছি। কিন্তু এখন আমরা কেউই জানিনা আমাদের সঙ্গে কী করা হবে। আমি আমার দেশের মেয়েদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত।”
- with inputs from IANS
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন