আফগানিস্তানে তালিবানি সরকারের ঘোষণায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করলো ইউনেস্কো। সম্প্রতি তালিবানি সরকারের পক্ষ থকে শুধুমাত্র ছাত্র এবং শিক্ষকদের জন্য স্কুল খোলার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। জারি হয়েছে ছাত্রী এবং শিক্ষিকাদের জন্য স্কুলে আসায় নিষেধাজ্ঞা। ইউনেস্কোর ডিরেক্টর জেনারেল অদ্রে আজৌলে এই প্রসঙ্গে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে তিনি জানিয়েছেন, যদি এই নিষেধাজ্ঞা জারি থাকে তাহলে তা হবে বালিকা এবং নারীদের শিক্ষার মৌলিক অধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন। ইউনেস্কো জানিয়েছে, যারা এই ধরণের ঘোষণা করেছে তাঁরা কেন এই ধরণের ঘোষণা করেছেন তাঁর ব্যাখ্যা দিতে হবে এবং ছাত্র ছাত্রী সকলের জন্য স্কুল খুলে দিতে হবে।
যদি মেয়েদের দ্রুত শিক্ষার সব স্তরে স্কুলে ফিরতে না দেওয়া হয় ইউনেস্কো সেই অপরিবর্তনীয় পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেছে। বিশেষ করে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মেয়েদের বিলম্বিত প্রত্যাবর্তন তাদের শিক্ষায় এবং শেষ পর্যন্ত জীবনে পিছিয়ে দেবার ঝুঁকি হতে পারে।
এই ধরণের ঘোষণা ড্রপ আউটের ঝুঁকি বাড়ায় এবং তাদের বাল্যবিবাহের মতো নেতিবাচক সমস্যার মুখোমুখি করে। এটি ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে শিক্ষার বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং শেষ পর্যন্ত মেয়েদের উচ্চশিক্ষা এবং জীবনের সুযোগে বাধা দিতে পারে।
ইউনেস্কো বলেছে, "আফগান শিশুদের প্রতি আমাদের অঙ্গীকার দ্ব্যর্থহীন, এবং আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব হল তাদের প্রত্যেকের শিক্ষার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা।"
সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান গত কুড়ি বছরে বিশেষ করে মেয়েদের এবং মহিলাদের শিক্ষায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভ করেছে। 2001 সাল থেকে, মহিলাদের সাক্ষরতার হার প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। যা ১৭ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে পৌঁছেছে; প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মেয়েদের সংখ্যা ২০০১ সালে প্রায় শূন্য থেকে ২০১৮ সালে ২.৫ মিলিয়ন হয়েছে। উচ্চশিক্ষায় মেয়েদের সংখ্যা ২০০১ সালে প্রায় ৫ হাজার থেকে ২০১৮ সালে ৯০ হাজারের এর কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। ২০০৭ সালে যেখানে শিক্ষিকাদের হার ছিলো ২৭ শতাংশ তা ২০১৮ সালে ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে। এই অগ্রগতি সত্ত্বেও স্কুলে মেয়েদের ফিরতে দেরি হলে দেশের উন্নয়নের জন্য গতি বাধাপ্রাপ্ত হবে।
- With inputs from IANS
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন