তালিবানি জঙ্গিদের বিয়ে দেওয়া হবে। সেই মর্মে নির্দেশিকা জারি হয়েছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে সেই নির্দেশিকা প্রকাশ্যে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বর্তমানে আফগানিস্তানে তালিবানরা নিজেদের জাহির করতে শুরু করছে। তালিবানরা নিজেদের দখলে নিয়ে নিয়েছে বেশিরভাগ শহর। ইতিমধ্যে ইরান, পাকিস্তান, উজবেকিস্তান, তাজাকিস্তানের সীমান্ত লাগোয়া একাধিক অঞ্চল তালিবান দখল করে নিয়েছে বলে খবর।
সেই শহরগুলিতে ধর্মগুরুদের উদ্দেশে তালিবান কালচারাল কমিশন নির্দেশিকা জারি করে বলেছে, ‘তালিবান যোদ্ধাদের বিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। পাত্রী চাই। শর্ত, পাত্রীদের ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে তরুণী হতে হবে। বিধবা হলে ৪৫ বছরের নীচে হতে হবে।' নির্দেশিকায় আরো বলা হয়েছে, 'তাঁদের বিয়ে করে পাকিস্তানের ওয়াজিরিস্তানে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে সবাইকে মুসলিম ধর্ম নিতে হবে।’
আফগানিস্তান থেকে আমেরিকা ও ন্যাটোর বাহিনী তুলে নেওয়ার পরেই সেদেশের ৮০ শতাংশ নিজেদের দখলে নিয়েছে বলে ঘোষণা করেছে তালিবান। তারপর থেকে ২০ বছর আগের তালিবানি শাসনের চিত্রই ফের ফিরে এসেছে। আফগানিস্তানের তাখর এলাকায় স্বামী ছাড়া কোনও মহিলাকে বাড়ি থেকে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে। কোনও মহিলা কর্মরত হতে পারবেন না। পুরুষরাই উপার্জন করতে পারবেন বলে ফতোয়া দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে মহিলাদের উপর পণের ফতোয়াও চাপানো হয়েছে। ২০০১ সালে আমেরিকার হস্তক্ষেপের আগেও মহিলাদের স্কুলে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। পুরুষ সঙ্গী ছাড়া বেরোনো যেত না। নিয়ম ভাঙলে সকলের সামনে তালিবান ধর্মীয় পুলিশ অত্যাচার করত, শাস্তি দিত।
তালিবানের বর্তমান নির্দেশে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সেদেশের অভিভাবকরা। তাঁদের আশঙ্কা, এ বার জোর করে বাড়ির তরুণীদের তুলে নিয়ে যাবে তালিবান জঙ্গিরা। তারপর তাঁদের চাকর করে রাখবে। এক আফগান নাগরিকের কথায়, ‘যে দিন থেকে তালিবান ক্ষমতা দখল করেছে, আমরা হতাশ। বাড়িতেও জোরে কথা বলা যায় না। গান শুনতে পারি না। শুক্রবারের বাজারে মহিলাদের পাঠানো যায় না। তালিবানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাড়িতে ১৮ বছরের অবিবাহিত মেয়ে থাকা পাপ। তাঁদের বিয়ে দিতে হবে।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন